সিরিয়ার দামেস্কে হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলজুড়ে শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম সামরিক শক্তিধর দেশ ইরান। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার রাতে ইরান থেকে অন্তত ১০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়াও ৩০টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ছিল ড্রোন। যদিও আইডিএফের দাবি, তারা ‘প্রায় সবগুলো’ হামলা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে তেহরানের কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের উচ্চপদস্থ কয়েকজন কর্মকর্তা নিহতের জবাবে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস’ এর অংশ হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে। সেই সঙ্গে ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশন গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) আবার আগ্রাসন চালালে কড়া জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। প্রেস টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আইআরজিসি’র এক সিনিয়র কমান্ডার।
রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি জানায়, মূলত ইসরায়েলজুড়ে থাকা সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ওই হামলা চালানো হয়। তবে মূল লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের বিমান-বিধ্বংসী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া। যদিও লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছানোর আগেই ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে মধ্যপ্রাচ্যে থাকা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ঘাঁটি থেকে ভূপাতিত করার দাবি করেছে তেল আবিব।
এক প্রতিবেদনে পার্স টুডে জানিয়েছে, আইআরজিসি’র এক সিনিয়র কমান্ডার বলেন- যদি ইরানের মাটিতে আবারও কোনো ধরনের সামরিক আগ্রাসন চালায় ইসরায়েল তবে ‘দ্বিগুণ শক্তি দিয়ে জবাব দেবে’ ইসরায়েল। অন্যদিকে, শনিবার রাতে ইসরায়েলে চালানো ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সফলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে জানিয়ে এক বিবৃতিতে আইআরজিসি বলেছে, ‘ইরানের হামলার পর আমেরিকা যদি ইহুদিবাদী ইসরাইলকে আগ্রাসন চালাতে সমর্থন দেয় বা তার সঙ্গে আগ্রাসনে অংশ নেয়, তবে উভয়ের জন্য চরম ও মর্মান্তিক জবাব দেবে ইরানের সামরিক বাহিনী।
তবে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) দাবি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জর্ডানের সঙ্গে তারা ‘প্রায় সবগুলো’ হামলা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে। অন্যদিকে, হামলার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ফোন করে সমন্বিত জি-সেভেন কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ‘বন্ধু দেশ’ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেই সঙ্গে হোয়াইট হাউস থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘আমি তাকে (নেতানিয়াহু) বলেছি- ইসরায়েল নজিরবিহীন আক্রমণের বিরুদ্ধে নিজেদের রক্ষা করার এবং শত্রুদের পরাজিত করার অসাধারণ ক্ষমতা প্রদর্শন করেছে। এটা শত্রুদের জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা যে, তারা কার্যতভাবে ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে না।’
উল্লেখ্য, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই দেশটির সঙ্গে ইরানের উত্তেজনা বাড়তে থাকে। এরমধ্যেই গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে তেহরানের কনস্যুলেটে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ইরানের সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা কুদস ফোর্সের সিরিয়া ও লেবানন শাখার কমান্ডারসহ উচ্চপদস্থ সামরিক বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা নিহত হন। এরপরই ইসরায়েলে প্রতিশোধমূলক হামলায় হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ইরান।
একুশে সংবাদ/স.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :