AB Bank
  • ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর, ২০২৫, ২২ আশ্বিন ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

চীনের কাছ থেকে ২০টি জে-১০সি যুদ্ধবিমান কিনছে বাংলাদেশ


Ekushey Sangbad
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০২:০৫ পিএম, ৭ অক্টোবর, ২০২৫

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর আধুনিকীকরণ ও আকাশ প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করতে বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে চীনের তৈরি সর্বাধুনিক মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান (এমআরসিএ) জে-১০সিই ক্রয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

প্রকল্পটির প্রাথমিক ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ২.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় আনুমানিক ২৭ হাজার ৬০ কোটি টাকা। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৫–২৬ এবং ২০২৬–২৭ অর্থবছরে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু হবে। এটি চীন সরকারের সঙ্গে সরকার-টু-সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পুরো অর্থ ১০ বছরের মধ্যে ধাপে ধাপে পরিশোধ করা হবে।

জে-১০সিই হলো চীনের বিমানবাহিনীতে ব্যবহৃত জে-১০সি মডেলের রপ্তানি সংস্করণ। এটি ৪.৫ প্রজন্মের মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্রাফট, যা আকাশ প্রতিরক্ষা, আক্রমণাত্মক মিশন এবং নির্ভুল হামলা পরিচালনায় সক্ষম।

সম্ভাব্য ব্যয় কাঠামো

প্রকল্প সংক্রান্ত নথি অনুযায়ী, প্রতিটি জে-১০সিই বিমানের সম্ভাব্য দাম ধরা হয়েছে প্রায় ৬ কোটি ডলার। এতে ২০টি বিমানের মূল মূল্য হবে ১২০ কোটি ডলার। প্রশিক্ষণ, যন্ত্রাংশ, রক্ষণাবেক্ষণ, পরিবহন, বীমা, ভ্যাট এবং অন্যান্য ব্যয়সহ মোট ব্যয় দাঁড়াবে আনুমানিক ২২০ কোটি ডলার। অর্থ মন্ত্রণালয় ২০৩৫–৩৬ অর্থবছর পর্যন্ত ধাপে ধাপে এই অর্থ পরিশোধ করবে।

চুক্তি তদারকিতে বিশেষ কমিটি

চুক্তির প্রক্রিয়া তদারক করতে ১১ সদস্যের আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিমান বাহিনীর প্রধান কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, প্রতিরক্ষা, অর্থ, আইন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিরা অন্তর্ভুক্ত। কমিটির কাজ হলো চুক্তিপত্র যাচাই, মূল্য নির্ধারণ, প্রশিক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থাপনা এবং চীনা পক্ষের সঙ্গে দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা।

জে-১০ সিরিজের গুরুত্ব

বিশ্বব্যাপী জে-১০ সিরিজের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় যখন পাকিস্তান দাবি করে যে, তারা এই মডেল ব্যবহার করে ভারতের ফরাসি রাফায়েল বিমানের বিরুদ্ধে সফলভাবে অভিযান চালিয়েছে। যদিও এ দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি, তবু জে-১০সিই দ্রুতই আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসে।

চীনের বিখ্যাত বাইই অ্যারোবেটিক টিম ২০০৯ সালে জে-১০এ মডেলকে তাদের প্রদর্শনী বহরে অন্তর্ভুক্ত করে এবং ২০২৩ সালে সর্বশেষ সংস্করণ জে-১০সি-তে আপগ্রেড করে। উচ্চ কর্মক্ষমতা, উন্নত এভিওনিক্স ও দীর্ঘ-পাল্লার ফ্লাইট সক্ষমতার কারণে এটি চীনের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির অন্যতম প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বর্তমান অবস্থা

বর্তমানে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বহরে রয়েছে ২১২টি বিমান, যার মধ্যে ৪৪টি যুদ্ধবিমান। এর মধ্যে প্রধান আক্রমণাত্মক শক্তি হিসেবে রয়েছে ৩৬টি চীনা এফ-৭ সিরিজ জেট। এছাড়া রয়েছে রাশিয়ার মিগ-২৯বি, ইয়াক-১৩০, এবং পরিবহন মিশনের জন্য সি-১৩০জে বিমান। পাশাপাশি হেলিকপ্টার ইউনিটে রয়েছে রাশিয়ান এমআই-১৭।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এমআই–১৭১ হেলিকপ্টারের ওপর নির্ভর করছে তাদের মিডিয়াম-লিফট অপারেশনের জন্য, আর নৌবাহিনীতে রয়েছে ইতালীয় এডব্লিউ–১০৯ এবং জার্মান ডিও–২২৮ বিমান, যা সমুদ্র টহল মিশনে ব্যবহৃত হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জে-১০সিই যুক্ত হলে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর আকাশ প্রতিরক্ষা ও আক্রমণাত্মক সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। দক্ষিণ এশিয়ার আকাশে কৌশলগত ভারসাম্যে বাংলাদেশ নতুন এক অবস্থানে পৌঁছাবে বলে তারা মনে করছেন।

 

একুশে সংবাদ/এ.জে

Link copied!