AB Bank
  • ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৫ ফাল্গুন ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

কঠিন দরকষাকষিতে যাচ্ছেন নাইডু ও নীতীশ


Ekushey Sangbad
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৬:০৭ পিএম, ৫ জুন, ২০২৪
কঠিন দরকষাকষিতে যাচ্ছেন নাইডু  ও নীতীশ

একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে বিজেপির ব্যর্থতা আর কংগ্রেসের বিষ্ময়কর পুনরুত্থানের মধ্যে দিয়ে শেষ হলো ভারতের লোকসভা নির্বাচনের লড়াই। এখন সবার নজরে দিল্লিবাড়ি। সেখানে শুরু হয়ে গেছে সরকার গঠন নিয়ে দৌড়ঝাঁপ। এতে জোটের সমর্থন নিয়ে এগিয়ে মোদীর বিজেপি। কংগ্রেসও বসে নেই। সরকার গঠনের অভিপ্রায়ে এনডিএন জোটের ভেতরে গোলমাল বাধিয়ে দেয়ার কৌশল আটছে কংগ্রেস।

কিন্তু এনডিএ জোটে গোলমালটা বাঁধবে কিভাবে? আগামী পাঁচ বছরে বিজয়ওয়াড়া এবং পাটনা নয়াদিল্লিতে ক্ষমতার সমীকরণে বিশাল ভূমিকা পালন করতে পারে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং অন্ধ্রপ্রদেশের অপেক্ষমান মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু, দুজনেই জোটের রাজনীতিতে প্রবীণ, যা ২০১৪ সালে শেষবার দেখে গেছে ভারতের রাজনীতিতে। উভয়ই জটিল জোট সমীকরণ নিয়ে দরকষাকষি এবং আলোচনায় চৌকস।

ইন্ডিয়া ব্লকের সদস্যরা এরিমধ্যে নাইডুর কাছে বার্তা পাঠিয়েছে। কিন্তু তিনি কি সাড়া দেবেন? নাইডু ১৯৯৬ সালে যুক্তফ্রন্টের আহ্বায়ক ছিলেন এবং ২০০৪ সাল পর্যন্ত এনডিএ-তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি ২০১৪ সালে আবারও এনডিএ জোটে ফেরেন এবং একটি বিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশে জয়লাভ করেন। কিন্তু ২০১৮ সালে জোট ছেড়ে দেয়ার পর ক্ষমতা হারান এবং রাজনৈতিকভাবে হয়রানির শিকার হন।

সেই সময়ের অন্ধ্রপ্রদেশের রাজ্য সরকার তাকে কারাগারে বন্দী করেছিল। তখন বিজেপি নাইডুর সঙ্গে একটি কঠিন দরকষাকষি চালায়। নাইডুকে অপেক্ষা করতে বাধ্য করে এবং অবশেষে একটি চুক্তি চূড়ান্ত করে এবং অন্ধ্রের আসন নিয়ে হালুয়া-রুটি ভাগাভাগিতে রাজি হন নাইডু। রাজ্যের ২৫টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৬টি নিয়ে বিজেপি। বলার অপেক্ষা রাখে না, এবার নাইডু বিজেপি জোটের সাথেই নির্বাচন করেছেন।  

ফলে এটা স্পষ্ট যে, বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায়, নাইডু দিল্লিবাড়ি থেকে তার প্রাপ্যটুকু আদায় করে নেবেন। তিনি একাধারে একজন কৌশলগত আলোচক, ধৈর্যশীল এবং হিসেবি। এরিমধ্যে নাইডু তার চাওয়া স্পষ্ট করেছেন, লোকসভার স্পিকার হতে চান তিনি। যা কার্যতই বিজেপির জন্য হজম করা কঠিনও হতে পারে। তবে, নাইডু জানেন তার দল টিডিপিকে ছাড়তেও চাইবে না বিজেপি।

লোকসভা নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও একক বৃহত্তম দল হিসাবে বিজেপির রয়েছে ২৩৮টি আসন। অন্যদিকে দ্বিতীয় বৃহত্তর দল কংগ্রেসের রয়েছে ১০০ আসন। ফলে ইনডিয়া ব্লকের পক্ষে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা কঠিন হবে। আর যদি কংগ্রেস সেটি করতেও যায়, তাহলে সেটি একটি অত্যন্ত অস্থিতিশীল সরকার হবে। শেষ পর্যন্ত ইনডিয়া ব্লক এটা চাইবে কি-না সেটিও দেখতে হবে।

নাইডু এসব বিষয়ে তীক্ষ্ণভাবে সচেতন। কিন্তু ইনডিয়া ব্লককে ‘বিকল্প’ হিসাবে রেখে দিলে এনডিএ জোটের সঙ্গে তার দর কষাকষির ক্ষমতা বাড়ে এবং তিনি খুব কঠিন দর কষাকষি চালাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। সেখানে তাঁর প্রধান দাবি অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য বিশেষ মর্যাদা। চাইবেন রাজ্যের জন্য টেকসই অর্থনৈতিক সুবিধা এবং অবশ্যই হায়দারাবাদে তার স্বপ্নের আইটি পার্ক বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা।

১৯৯৯ সালে নাইডু মন্ত্রিসভার বাইরে ছিলেন এবং টিডিপি লোকসভা স্পিকারের পদ নিশ্চিত করেন। তিনি এবারও সেই একই কৌশল অনুসরণ করতে পারেন, যা মোদীর আলোচনার দক্ষতাকে বড় পরীক্ষায় ফেলবে। প্রধানমন্ত্রী মোদী কখনও জোটের নেতৃত্ব ছাড়েননি। তাই নাইডুর সঙ্গে আলোচনা করা কঠিন চ্যালেঞ্জ হতে পারে। গত ১০ বছরে বিজেপি অনেক অংশীদারকে হারালেও, এবার সেই ঝুঁকি নিতে পারবেন না মোদী।

সংখ্যাতত্ত্ব, আসন সমীকরণ আর বিজেপির সঙ্গে পূর্ব সখ্যতার কারণে নাইডু’র এনডিএ জোটে থেকে যাবার সম্ভাবনাই বেশি। তবে জোটের রাজনীতি বড়ই অনিশ্চিত একটি খেলা, যে কোন ব্যক্তি বা দলের স্বার্থ কোন ধরনের টানপোড়েন হলেই বিপন্ন হয়ে ওঠে যে কোন জোট। তাই আগামী কয়েক দিন বিজয়ওয়াড়া এবং দিল্লির মধ্যে ঝোপাপড়া কেমন হয় এবং ভবিষ্যতে কোন দিকে যায়, সেদিকে নজর থাকবে সবার।

নীতীশ কুমারও জোটের রাজনীতির একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। ২০০৪ সালে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হবার আগ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর অধীনে এনডিএ মন্ত্রিসভায় ছিলেন। তিনি সব পক্ষ খেলেছেন এবং সহজেই জোট পরিবর্তন করেছেন। তিনি ভারত জোটের মূল স্থপতিদের একজন ছিলেন, কিন্তু ভোটের কয়েক মাস আগে ‘পল্টিরাম’ হিসাবে খ্যাত এই নেতা বিজেপিতে চলে যান।

তিনিও দিল্লিবাড়ির খাবার টেবিলে হালুয়া-রুটির ভাগ চাইবেন। তবে, তিনি রাজ্যে বিজেপির সাথে জোটের অংশীদারত্ব এবং নিজ দলকে বিপর্যস্ত করতে চান না। তার চূড়ান্ত স্বপ্ন হলো প্রধানমন্ত্রীর পদ এবং সেটা যদি টেবিলে থাকে, তাহলে তিনি যে কোনো জায়গায় যেতে পারেন। মাত্র ১৪টি আসন নিয়েই তিনি এতো বিশাল স্বপ্নের সওদা করার যোগ্যতা রাখেন। তবে আপাতত মন্ত্রিসভায় আসন নিশ্চিত করাই নীতীশের লক্ষ্য।

 

একুশে সংবাদ/এ.র/সা.আ

Link copied!