নিজের লাইসেন্সকৃত বন্দুক মাথায় ঠেকিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন নজরুল ইসলাম (৭০) নামে এক ব্যবসায়ী। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোটচাঁদপুরের সলেমানপুর কারিগরপাড়ায় তাঁর নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নজরুল ইসলাম ওই এলাকার মৃত আব্দুর রহিম বিশ্বাসের ছেলে। তবে আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ জানা যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নজরুল ইসলাম নিজ বাড়ির দোতলার এক কক্ষে থাকতেন। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার রাতেও খাবার শেষে শোবার ঘরে যান। রাতের কোনো এক সময়ে তিনি নিজের লাইসেন্সকৃত দো-নালা বন্দুক নিয়ে নিচতলার একটি কক্ষে যান। পরে বন্দুক মাথায় ঠেকিয়ে গুলি চালান। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। লাশ পড়ে ছিল ঘরের মেঝেতে। পাশে পাওয়া যায় বন্দুক, গুলি ও তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন।
এর আগে মোবাইলে প্রতিবেশী আলাউদ্দিনকে ফোন করে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বন্দুক গুলি ভরা হয়ে গেছে, তুই একটু ৯৯৯-এ কল কর।’ এরপরই তিনি ফোন কেটে দেন। আলাউদ্দিন জানান, রাত দেড়টার দিকে তিনি নজরুল ইসলামের বাড়িতে ছুটে যান। তবে গেট বন্ধ থাকায় ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। বারবার ফোন করলেও কোনো সাড়া পাননি। পরে সকালে তাঁর মৃত্যুর খবর জানতে পারেন।
আলাউদ্দিন বলেন, “ওনার সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। তিনি সামাজিক মানুষ ছিলেন। কবরস্থানে কবর খোঁড়ার কাজে তিনি আমাকে প্রায়ই সহযোগিতা করতেন।”
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ভোরে নজরুল ইসলামের ছেলে ইয়াসির আরাফাত তাঁকে শোবার ঘরে না পেয়ে খুঁজতে শুরু করেন। পরে নিচতলায় রক্তাক্ত অবস্থায় বাবার লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে তিনিও নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি।
নিহত নজরুল ইসলাম ছিলেন আট ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয়। তিনি তিন সন্তানের জনক ও পেশায় কাপড়ের ব্যবসায়ী ছিলেন।
খবর পেয়ে কোটচাঁদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুন্না মিয়া, থানার ওসি কবির হোসেন মাতুব্বর, ওসি (তদন্ত) এনায়েত আলী খন্দকার এবং এসআই মাসুম বেল্লা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ মর্গে পাঠিয়েছে। এ সময় লাশের পাশ থেকে জব্দ করা হয় লাইসেন্সকৃত বন্দুক, বন্দুকের লাইসেন্স ও ৪৬ রাউন্ড গুলি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুন্না মিয়া বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে নজরুল ইসলামের ব্যাংকে ঋণ ছিল। সেই কারণেই হয়তো তিনি আত্মহত্যা করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
একুশে সংবাদ/ঝি.প্র/এ.জে