কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পরকীয়ার জেরে দেড় বছরের কন্যা শিশু নুসরাতকে গলা টিপে হত্যার মামলার প্রধান আসামি আলমগীর মিয়া (৩২) কে ঘটনার তিন মাস পর গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৪ সিপিসি-২ ভৈরব ক্যাম্পের সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের টান কৃষ্ণনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভৈরব র্যাব ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সিনিয়র পুলিশ সুপার মো. মুহিত কবীর সের্নীয়াবাত।
এর আগে একই ঘটনার অভিযোগে শিশু নুসরাতের মা আয়েশা খাতুন (২৫) কে গত ৭ জুন রাতে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে ভৈরব থানা পুলিশ।
অভিযুক্ত আয়েশা খাতুন ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া থানার চন্দ্রগুনা গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে এবং নরসিংদীর বেলাব থানার নিলক্ষীয়া গ্রামের ওমর ফারুকের স্ত্রী। অপর আসামি আলমগীর মিয়া একই ইউনিয়নের টান কৃষ্ণনগর গ্রামের শাহজাহান মিয়ার ছেলে।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর আগে আয়েশা খাতুনের সঙ্গে নিলক্ষীয়ার ওমর ফারুকের বিয়ে হয়। বিয়ের পর প্রথমদিকে সংসার ভালো চললেও পরে আলমগীরকে কেন্দ্র করে দাম্পত্য জীবনে কলহ দেখা দেয়। তাদের সংসারে তিন বছরের ছেলে আলিফ ও দেড় বছরের মেয়ে নুসরাত ছিল।
ভৈরব শহরের জগন্নাথপুরের লক্ষ্মীপুর এলাকায় ভাড়া থেকে পাদুকা শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন ওমর ফারুক। একই পেশায় নিয়োজিত আলমগীরের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্র ধরে আয়েশার সঙ্গে তার পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে আয়েশা তার ছেলে আলিফকে স্বামীর বাড়িতে রেখে আলমগীরের সঙ্গে লক্ষ্মীপুর এলাকায় ভাড়াবাসায় ওঠেন।
গত ৭ জুন সন্ধ্যায় হঠাৎ দেড় বছরের শিশু নুসরাত মারা গেলে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। এ সময় আয়েশার চিৎকারে বাড়ির মালিক শাহীন কবীরসহ আশপাশের লোকজন জড়ো হন এবং পরবর্তীতে আয়েশাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরদিন (৮ জুন) নিহত শিশুটির দাদা আবুল কালাম বাদী হয়ে নুসরাতের মা আয়েশা ও আলমগীরকে আসামি করে ভৈরব থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
র্যাব জানায়, ঘটনার পর থেকে আলমগীর পলাতক ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে তাকে টান কৃষ্ণনগর এলাকা থেকে মোবাইলে লুডু খেলার সময় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে ভৈরব থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/কি.প্র/এ.জে