প্রবাসে থেকেও যাঁরা দেশের সংস্কৃতি, ভাষা ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরেন, তাঁদের মধ্যেই একজন উজ্জ্বল নাম সৈয়দ এম হোসেন বাবু। সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বে লস এঞ্জেলেসে গড়ে উঠেছে এক প্রাণবন্ত বাঙালি কমিউনিটি, যেখানে দেশীয় সংস্কৃতি পেয়েছে মর্যাদা ও জীবন্ততা।
সৈয়দ এম হোসেন বাবু শুধু একজন সাংস্কৃতিক সংগঠক নন, তিনি প্রবাসী সমাজের একজন দক্ষ নেতৃত্বদাতা হিসেবেও সুপরিচিত। তাঁর উদ্যোগ ও তত্ত্বাবধানে লস এঞ্জেলেসে অনুষ্ঠিত হয়েছে বহু জমকালো সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা, সংগীতানুষ্ঠান, চাঁদরাত, বৈশাখী মেলা ও কবিতা আসর—যেগুলোর মূল লক্ষ্য ছিল নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশের সংস্কৃতি ও শিকড়ের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা।
২০০৬ সালে তাঁর উদ্যোগেই যাত্রা শুরু করে ‘বাংলা পাঠশালা’—একটি ব্যতিক্রমী প্রচেষ্টা যা প্রবাসে বেড়ে ওঠা শিশুদের বাংলা ভাষা শেখানো এবং বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কাজে নিবেদিত। এই পাঠশালায় শিশুদের শেখানো হয় বাংলা বর্ণমালা, কবিতা, ছড়া, জাতীয় ইতিহাস এবং লোকসংগীত। বিশেষ দিবসগুলোতে আয়োজিত অনুষ্ঠানগুলোতে তারা অংশগ্রহণ করে নৃত্য, গান, আবৃত্তি ও নাটকে। এই প্রচেষ্টার ফলে অনেক শিক্ষার্থী এখন নিজেরাই বাংলা শেখাতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
সাংগঠনিক দিক থেকে সৈয়দ এম হোসেন বাবুর নেতৃত্বও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। স্বাধীনতার পর লস এঞ্জেলেসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রথম সংগঠন ‘বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব লস এঞ্জেলেস (BALA)’ গঠনে তিনি ছিলেন অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী। BALA-র সভাপতি হিসেবে দুইবার দায়িত্ব পালন করে তিনি তাঁর দক্ষতা ও প্রতিশ্রুতি প্রমাণ করেছেন।
জাতীয় পর্যায়েও তিনি রেখেছেন সুস্পষ্ট অবদান। ৩৬তম ফোবানা (FOBANA) সম্মেলনে সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে তিনি একটি সফল ও সুশৃঙ্খল সম্মেলনের আয়োজন করেন, যা প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে ঐক্য, সাংস্কৃতিক বন্ধন এবং জাতীয় পরিচয়ের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।
সৈয়দ এম হোসেন বাবুর নেতৃত্ব, নিষ্ঠা এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তাঁর অবদান লস এঞ্জেলেসের প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য এক উদাহরণ হয়ে থাকবে। প্রবাসে থেকেও মাতৃভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি যে ভালোবাসা অটুট রাখা যায়—তাঁর কর্মকাণ্ড সেই সত্যকেই প্রতিষ্ঠিত করেছে।
একুশে সংবাদ//এসং//র.ন