এ বছরের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন হাঙ্গেরির খ্যাতনামা লেখক লাসজলো ক্রাসনাহোরকাই। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সুইডিশ অ্যাকাডেমি এক ঘোষণায় তার নাম প্রকাশ করে।
অসামান্য সাহিত্যকীর্তি ও সৃষ্টিশীল অবদানের জন্য তাকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে নোবেল কমিটি।
সাহিত্যের নোবেল বিজয়ীদের তালিকা সাধারণত অত্যন্ত গোপন রাখা হয় — সুইডিশ অ্যাকাডেমি ৫০ বছর পর্যন্ত মনোনয়ন সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করে না, ফলে আগেভাগে অনুমান করা প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে।
নোবেল পুরস্কারের ইতিহাস অনুযায়ী, ১৯০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ১১৭ বার সাহিত্যে নোবেল প্রদান করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ১২১ জন সাহিত্যিক এ মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৮ জন নারী। এছাড়া চারবার যৌথভাবে একাধিক লেখককে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।
‘সেইবো দেয়ার বিলো’ সংকলন
তার একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো ২০০৩ সালের উপন্যাস ‘এ মাউন্টেন টু দ্য নর্থ, এ লেক টু দ্য সাউথ, পাথস টু দ্য ওয়েস্ট, এ রিভার টু দা ইস্ট’। উপন্যাসটি জাপানের কিয়োটোর একটি রহস্যময় কাহিনীকে বর্ণনা করেছে। উপন্যাসটি কাব্যিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ।
এই উপন্যাসটির ওপর ভিত্তি করে তিনি তার বিশাল সাহিত্য সংকলন ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ লেখেন। এই সংকলনে রয়েছে ১৭টি গল্প, যা এক বিশেষ বিন্যাসে সাজানো হয়েছে। গল্পগুলোতে এমন এক জগতের সৌন্দর্য ও শিল্পের স্থান নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যে জগৎ দ্রুত পরিবর্তনশীল এবং এটির সৌন্দর্য উপলব্ধি করা যায় না।
বইটির গল্পের সূচনা হয় কামো নদীর ধারে অপেক্ষারত একটি সাদা বকের মনোমুগ্ধকর চিত্র দিয়ে।
বইটির মূল থিমটি জাপানের একটি পৌরাণিক কাহিনি থেকে এসেছে। যেখানে সেইবো নামের এক দেবী এমন এক বাগান পাহারা দেন যেখানে প্রতি তিন হাজার বছর পর অমরত্বের ফল ধরে।
গল্পগুলো শিল্প সৃষ্টির প্রক্রিয়া নিয়ে অনুসন্ধান চালায়, যেখানে দেখানো হয় যে শিল্পের সৃষ্টি হয় দীর্ঘ প্রস্তুতি ও নিপুণ দক্ষতার মাধ্যমে। আবার কখনও কখনও অপ্রত্যাশিত ঘটনাও এই সৃষ্টিকে প্রভাবিত করে।
‘সেইবো দেয়ার বিলো’ এর গল্পগুলোতে শিল্পী নিজে প্রায়শই অনুপস্থিত থাকেন। তার এ কর্মে পাঠকরা এমন চরিত্র দেখেন যারা শিল্প সৃষ্টিতে সহায়তা করলেও এর গভীর অর্থ সম্পূর্ণভাবে বুঝতে পারে না। বইটি দক্ষতার সাথে শিল্প সৃষ্টির রহস্যময় কর্মকাণ্ডের ওপর পাঠকের সামনে নানা দৃষ্টিকোণ তুলে ধরে।
এদিকে সাহিত্যের নোবেলের জন্য মনোনীতদের নাম দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে গোপন রাখছে সুইডিশ অ্যাকাডেমি। এ কারণে কে এ পুরস্কার জিততে পারেন সেটি আগে থেকে ধারণা করা যায় না।
১৯০১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১১৭ বার সাহিত্যে নোবেল দেওয়া হয়েছে। আর সবমিলিয়ে ১২১ সাহিত্যিক নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। যারমধ্যে ১৮ জন হলেন নারী। এছাড়া চারবার যৌথভাবে একাধিক ব্যক্তিকে সাহিত্যে নোবেল দেওয়া হয়েছে।
একুশে সংবাদ/এ.জে