দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ২৬ দিনের মাথায় পদত্যাগ করেছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকর্নু। নতুন মন্ত্রিসভার নাম ঘোষণা করার এক দিনেরও কম সময় পরই সোমবার সকালে তিনি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে বৈঠকের পর নিজের পদত্যাগপত্র জমা দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এলিসি প্রাসাদ।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, লেকর্নু জানিয়েছেন— রাজনৈতিক দলগুলোর অনমনীয় অবস্থান ও সমঝোতার অভাবের কারণে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কার্যকরভাবে দায়িত্ব পালনের পরিবেশ তিনি পাননি।
সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লেকর্নু মাত্র ২৬ দিন আগে ফ্রাঁসোয়া বেয়রো সরকারের পতনের পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান। কিন্তু জাতীয় পরিষদের বিভিন্ন দল তার মন্ত্রিসভার গঠন নিয়ে তীব্র সমালোচনা করে এবং অনাস্থা ভোটের হুমকি দেয়।
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনের বাইরে দেওয়া এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে লেকর্নু রাজনৈতিক দলগুলোর “পক্ষপাতদুষ্ট মানসিকতার” সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, “সবাই এমন আচরণ করছে যেন তাদেরই পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। প্রত্যেক দলই চায় অন্যরা তাদের কর্মসূচিকে সম্পূর্ণভাবে গ্রহণ করুক। রাজনৈতিক অহংকার দূরে সরিয়ে রেখে সমঝোতার পথেই সমাধান খুঁজতে হবে।”
লেকর্নুর পদত্যাগে নতুন রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এখন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর সামনে তিনটি বিকল্প— নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা, জাতীয় পরিষদ ভেঙে আগাম নির্বাচন দেওয়া, অথবা নিজে পদত্যাগ করা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে আগাম নির্বাচনই সবচেয়ে বাস্তবসম্মত পথ, যদিও এতে ম্যাক্রোঁপন্থি দলগুলোর জন্য বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। এর বিপরীতে কট্টর-ডানপন্থি নেত্রী মেরিন লে পেনের ন্যাশনাল র্যালি (আরএন) বড় ধরনের সুবিধা পেতে পারে।
লে পেন এ প্রসঙ্গে বলেন, “এখন সবচেয়ে যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত হবে— নতুন নির্বাচনের আয়োজন।”
লেকর্নু দুই বছরেরও কম সময়ে ফ্রান্সের পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী। ধারাবাহিক রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্যারিস স্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ারমূল্যও বড় পতনের মুখে পড়েছে।
একুশে সংবাদ/এ.জে