ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে অনাহার ও অপুষ্টিজনিত কারণে আরও ১১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে।
রোববার (১৭ আগস্ট) কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানায়, নতুন করে হতাহতের ঘটনার পর চলমান সংঘাতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬১ হাজার ৮৯৭ জনে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলি অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত আহত হয়েছেন অন্তত এক লাখ ৫৫ হাজার ৬৬০ জন।
শুধু গত ২৪ ঘণ্টাতেই আহত হয়েছেন ৩৮৫ জন। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে আটজনের মরদেহ। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর নতুন করে শুরু হওয়া অভিযানে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ৩৬২ জন নিহত এবং ৪৩ হাজার ৬১৯ জন আহত হয়েছেন।
অপরদিকে, অপুষ্টি ও খাদ্যসংকটে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২৫১ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে ১০৮ জন শিশু। জাতিসংঘের সংস্থাগুলো জানিয়েছে, গাজায় অন্তত ১০ লাখ নারী ও কিশোরী চরম খাদ্যাভাবের মুখে পড়েছেন। চিকিৎসা সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা এমএসএফ বলছে, ইসরায়েলি হামলায় বহু ত্রাণকেন্দ্র কার্যত "মৃত্যুকূপে" পরিণত হয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্যে দেখা গেছে, ২৭ মে থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত শুধু ত্রাণ সংগ্রহের সময়েই প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৭৬০ ফিলিস্তিনি। গাজার সিভিল ডিফেন্স জানায়, খাদ্য ঘাটতি মোকাবেলায় দৈনিক ১ হাজার ট্রাক প্রবেশ করা প্রয়োজন হলেও বাস্তবে মাত্র ১০০টির মতো ট্রাক ঢুকছে। তবে এর বেশিরভাগই ব্যবসায়ীদের হাতে চলে যাচ্ছে, সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারছে না বলে অভিযোগ তাদের।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, তীব্র খাদ্যসংকটের কারণে নারী ও কিশোরীরা বাধ্য হয়ে বাইরে বের হচ্ছেন; এতে হামলার শিকার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। দাতব্য সংস্থাগুলো বলছে, গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এখন প্রায় ভেঙে পড়েছে এবং বিপুল সংখ্যক আহত মানুষের চিকিৎসা দেওয়ার সামর্থ্য নেই।
একুশে সংবাদ/আ.ট/এ.জে