চীন তিব্বতের ইয়ারলুং জাংবো নদীতে (বাংলাদেশ ও ভারতে যা ব্রহ্মপুত্র নামে পরিচিত) বিশ্বের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু করেছে।
শনিবার (১৯ জুলাই) তিব্বতের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে ৬০ গিগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে।
চীনের সরকারি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়ারলুং জাংবো নদীতে এ ‘মেগা-বাঁধ’ নির্মাণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং উপস্থিত ছিলেন।
চীনা বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, প্রকল্পের আওতায় পাঁচটি বড় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এতে আনুমানিক ব্যয় হবে ১.২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান (১৬৭.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)।
এর আগে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভারত জানায়, তিব্বতে চীনের এই প্রকল্প নিয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথা বেইজিংকে জানিয়েছে নয়াদিল্লি। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়, তিব্বতের উজানে বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি নজরদারিতে রাখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনে নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, উজানে যেকোনো প্রকল্প যেন ব্রহ্মপুত্রের নিম্নপ্রবাহের দেশগুলোর স্বার্থে ক্ষতিকর না হয়, সে বিষয়ে চীনকে সচেতন থাকতে বলা হয়েছে।
তবে গত ডিসেম্বরে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই প্রকল্পের কারণে নিম্নপ্রবাহের দেশে ‘নেতিবাচক প্রভাব’ পড়বে না এবং চীন প্রয়োজনীয় যোগাযোগ বজায় রাখবে।
এদিকে পরিবেশবিদ ও অধিকারকর্মীরা বারবার এই প্রকল্পের বিরোধিতা করে আসছেন। তাদের আশঙ্কা, এই ধরনের বিশাল বাঁধ তিব্বতের মতো সংবেদনশীল পরিবেশে অপূরণীয় ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। এর আগে ‘থ্রি জর্জেস’ বাঁধ নির্মাণের সময় ১৪ লাখ মানুষকে জোরপূর্বক স্থানান্তর করতে হয়েছিল চীনকে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের নভেম্বরে চীন এই বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনার ঘোষণা দেয়। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেয় বেইজিং। ২০৬০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের পথে এগোচ্ছে চীন।
পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো শুরু থেকেই এই প্রকল্পের সমালোচনা করে আসছে।
একুশে সংবাদ/আ.ট/এ.জে