AB Bank
  • ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

গাজায় অনাহারে ১০ জনসহ আরও শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত


Ekushey Sangbad
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১০:১৫ এএম, ২৪ জুলাই, ২০২৫

গাজায় অনাহারে  ১০ জনসহ  আরও শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি অবরোধের কারণে ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ১০০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। একই সময়ে অনাহারে মারা গেছেন আরও ১০ জন।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর ২০২৩ থেকে চলমান সংঘাতে অপুষ্টিজনিত কারণে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১১ জনে। এর বেশিরভাগই ঘটেছে গত কয়েক সপ্তাহে।

গাজায় হামলায় নিহতদের মধ্যে ৩৪ জন ছিলেন মানবিক সহায়তা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। হামলার ফলে শুধু হতাহতের সংখ্যা বাড়েনি, পরিস্থিতি আরও সংকটময় হয়ে উঠেছে খাদ্যাভাবের কারণে।

জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ২০২৪ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত নিহত শিশুদের অন্তত ২১ জনের বয়স পাঁচ বছরের নিচে। সংস্থাটির মতে, মার্চ থেকে মে পর্যন্ত প্রায় ৮০ দিন তারা গাজায় কোনো খাদ্য সরবরাহ করতে পারেনি। বর্তমানে সীমিত আকারে সহায়তা প্রবেশ করছে, কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।

এক যৌথ বিবৃতিতে মার্সি কর্পস, নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল ও রিফিউজিস ইন্টারন্যাশনালসহ ১১১টি আন্তর্জাতিক সংস্থা জানিয়েছে, “গাজায় এখন কার্যত গণ-অনাহার চলছে।” সীমান্তে বিপুল খাদ্য, পানি ও ওষুধ মজুত থাকলেও সেগুলো গাজায় প্রবেশ করানো যাচ্ছে না বলে জানায় সংস্থাগুলো।

গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকা থেকে সংবাদদাতা তারেক আবু আজ্জুম জানান, “এখন ক্ষুধাও যেন বোমার মতো ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। গাজার মানুষ আর চাহিদা অনুযায়ী খেতে চাচ্ছে না, তারা কেবল বেঁচে থাকতে চায়।” তিনি বলেন, স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের অবস্থা বর্ণনা করছেন ‘ধীর, যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু’ হিসেবে।

চলতি বছরের মার্চে ইসরায়েল গাজার ভেতরে সব ধরনের পণ্য প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। মে মাসে সীমিত সহায়তা প্রবেশ শুরু হলেও বিতরণ প্রক্রিয়া পরিচালিত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর মাধ্যমে।

জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবিক সংস্থা অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল গাজায় প্রবেশ ও প্রস্থানের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখে সহায়তার প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করছে। মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত সহায়তা নিতে আসা বহু ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির জরুরি বিভাগের পরিচালক রস স্মিথ বলেন, “গাজায় সহায়তা কার্যক্রম চালাতে হলে কিছু মৌলিক শর্ত নিশ্চিত করা জরুরি। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে—খাদ্য সরবরাহ ও বিতরণ এলাকায় কোনো সশস্ত্র বাহিনীর উপস্থিতি না থাকা।”

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফিলিস্তিনি অঞ্চলের প্রতিনিধি রিক পিপারকর্ন জানান, গাজায় সহায়তা নিতে গিয়ে আহতদের ভিড়ে হাসপাতালগুলো এখন কার্যত ট্রমা সেন্টারে পরিণত হয়েছে। চিকিৎসক, শিক্ষক ও সাংবাদিকরাও নিজেদের কাজ চালিয়ে যেতে পারছেন না, কারণ তারাও একইভাবে ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষে ভুগছেন।

গাজার আল-শিফা হাসপাতালের চিকিৎসক নুর শরাফ জানান, “মানুষ দিনের পর দিন না খেয়ে থাকছে। অনেকে ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে। চিকিৎসকরাও কখনো খাবার না পেয়েই তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।”

 

 

একুশে সংবাদ/ঢ.প/এ.জে

Link copied!