বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থের সংযোগ ভারতের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান।
বুধবার (৯ জুলাই) নয়াদিল্লিভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ) আয়োজিত এক আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।
যদিও আলোচনায় সরাসরি কোনো দেশের নাম তিনি উল্লেখ করেননি, তবে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল দেশগুলোতে বিদেশি শক্তির প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ভারতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে বলে তিনি সতর্ক করেন।
জেনারেল চৌহান বলেন, “বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে অভিন্ন স্বার্থের যে সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে, তা ভারতের নিরাপত্তা কাঠামোয় গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।”
আলোচনার সময় তিনি ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামক একটি সামরিক অভিযানের প্রসঙ্গও তুলে ধরেন, যা সম্প্রতি পাকিস্তানের ভূখণ্ডে পরিচালনা করা হয়েছিল বলে দাবি করা হয়। চীনের ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, ওই অভিযানে বেইজিং পাকিস্তানকে সরাসরি কী ধরনের সহায়তা দিয়েছে, তা নির্ধারণ করা সহজ নয়।
চৌহানের ভাষ্য অনুযায়ী, এই অভিযান সম্ভবত ইতিহাসে প্রথম, যেখানে দুটি পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ সরাসরি সামরিক সংঘাতে জড়িয়েছে। “এটি এক অনন্য অভিজ্ঞতা, যা বৈশ্বিক পরিসরে শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত হতে পারে,” মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ভারতের ‘নো ফার্স্ট ইউজ’ পারমাণবিক নীতি প্রচলিত যুদ্ধের জায়গা তৈরি করে দেয়, তবে দেশটি কখনোই পারমাণবিক চাপের কাছে আত্মসমর্পণ করবে না।
আগামীর যুদ্ধ নিয়ে সতর্কতা জানিয়ে তিনি বলেন, ভবিষ্যতের সংঘর্ষ শুধু প্রচলিত অস্ত্র নয়, সাইবার ও ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক যুদ্ধক্ষেত্রেও বিস্তৃত হতে পারে। ভারতের উচিত সকল স্তরের যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকা।
কাশ্মিরের পেহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার জবাবে ভারতের ‘প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ’ প্রসঙ্গ টেনে তিনি জানান, সে সময় পাকিস্তানের সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলো লক্ষ্যবস্তু করা হয়। তিনি বলেন, “আপনি একে প্রতিশোধ বা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা যাই বলুন না কেন, এর উদ্দেশ্য ছিল ভবিষ্যতের হামলা প্রতিরোধ করা।”
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এ.জে