ভারতের আহমেদাবাদ থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ভয়াবহ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে উড্ডয়নের মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মাথায় বিমানটি গুজরাটের বিজে মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসের ওপর পড়ে যায়। দুর্ঘটনায় অন্তত ২৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে বিমানযাত্রী ছাড়াও ছাত্রাবাসে অবস্থান করা শিক্ষার্থীরা রয়েছেন। খবর: রয়টার্স।
আহমেদাবাদ পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উড্ডয়নের পরপরই পাইলট একটি জরুরি সংকেত (মে ডে কল) পাঠান, তবে এরপর বিমানটির সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। এরপরই এটি একটি বহুতল হোস্টেল ভবনে আছড়ে পড়ে, যেখানে অনেক শিক্ষার্থী অবস্থান করছিলেন।
জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানিও রয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, সবার পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের কাজ চলছে।
এই ঘটনায় একমাত্র জীবিত হিসেবে উদ্ধার করা হয়েছে বিমানটির ১১-এ সিটে থাকা এক তরুণ যাত্রীকে। তার পরনে ছিল সাদা টি-শার্ট এবং কালো ট্রাউজার; শরীরে ছিল আঘাতের চিহ্ন।
বিমানটিতে মোট ২৪২ জন আরোহী ছিলেন, এর মধ্যে ২১৭ জন প্রাপ্তবয়স্ক, ১৩ শিশু এবং ১২ জন ক্রু সদস্য। যাত্রীদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং ১ জন কানাডীয় নাগরিক ছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময় প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ হয় এবং আকাশে ধোঁয়া ও আগুনের শিখা দেখা যায়। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে উদ্ধার কাজে সহায়তা করেন।
বিমান প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বোয়িং জানিয়েছে, তারা এয়ার ইন্ডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এবং ঘটনাটি নিয়ে তদন্তে সহযোগিতা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (NTSB) এবং ইঞ্জিন নির্মাতা জিই অ্যারোস্পেস তদন্তে সহায়তা করছে।
এদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই দুর্ঘটনাকে “বেদনাদায়ক” আখ্যা দিয়ে শোক প্রকাশ করেছেন। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কির স্টারমার এবং বাকিংহাম প্যালেস থেকেও শোকবার্তা পাঠানো হয়েছে।
দুর্ঘটনার পর কিছু সময় বন্ধ থাকার পর আহমেদাবাদ বিমানবন্দর আংশিকভাবে বিমান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এটি গত এক দশকে ভারতে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
একুশে সংবাদ/ ঢ.প/এ.জে