মানুষ গড়ার কারিগর—এই কথাটি শুধু প্রবাদ নয়, বাস্তব সত্য। শিক্ষকই সমাজ গঠনের মূল ভিত্তি। সেই মানুষ গড়ার কারিগরদের সম্মান জানাতে সারা বিশ্বের মতো আজ রোববার পালিত হচ্ছে বিশ্ব শিক্ষক দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য— “শিক্ষকতা পেশা, মিলিত প্রচেষ্টার দীপ্তি।” সংক্ষিপ্ত এই বাক্যের মধ্যে নিহিত আছে এক গভীর তাৎপর্য।
একজন আদর্শ শিক্ষকের কখনও মৃত্যু হয় না। তিনি বেঁচে থাকেন তাঁর অগণিত ছাত্র-ছাত্রীদের মনে, কর্মে, কৃতিত্বে এবং জীবনের প্রতিটি সাফল্যে। শিক্ষক মানেই জীবনের পথপ্রদর্শক, অন্ধকারে আলোকবর্তিকা।
ঠিক তেমনই ছিলেন শিক্ষক মো. ইসহাক স্যার—যিনি শুধু শিক্ষকই নন, একজন আদর্শ অভিভাবকও ছিলেন। ১৯৯৯ সালের দিকে তিনি তাঁর শিক্ষার্থীদের নামাজ শিক্ষা দিতেন এবং মসজিদে জামাতে নামাজ পড়তে উৎসাহিত করতেন। তিনি বলতেন, “জামাতে নামাজ পড়ার গুরুত্ব অপরিসীম।” কোনো ছাত্র যদি নামাজ আদায় না করত, তিনি ক্লাসে গিয়ে খোঁজ নিতেন, বুঝিয়ে বলতেন, আবারও উৎসাহিত করতেন।
স্বশিক্ষা, সু-শিক্ষা ও ইসলামি মূল্যবোধ গঠনে তাঁর অবদান ছিল অনন্য। তাঁর মতো শিক্ষক প্রত্যেক স্কুলে থাকা প্রয়োজন—যিনি শুধু পাঠ্যবই নয়, জীবন শিক্ষা দেন।
২০২২ সালের ২৩ অক্টোবর, শনিবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই প্রিয় শিক্ষক। আল্লাহ তায়ালা তাঁকে জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুল করুন—এ কামনাই তাঁর প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের।
মো. ইসহাক স্যার নোয়াখালী জেলার সেনবাগ থানার শ্রীপদ্দি গ্রামের ইসমাইল মাস্টার বাড়ির আব্দুর রহমানের ছেলে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, চার ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।
শাহাজাদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও বিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় তাঁর ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। তিনি দক্ষিণ শ্রীপদ্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ও সাবেক সভাপতি ছিলেন।
এছাড়া তিনি সারাজীবন সামাজিক ও সেবামূলক সংগঠনের পাশে থেকে মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। আজ তিনি আমাদের মাঝে নেই, তবে বেঁচে আছেন তাঁর শিক্ষা, শাসন, মূল্যবোধ ও স্মৃতির ভান্ডারে—চিরঅম্লান হয়ে।
একুশে সংবাদ/এ.জে