ইতালি আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অসাংগঠনিক কর্মকান্ডের অভিযোগ উঠেছে।
গত রোববার সন্ধ্যায় ইতালির রোমের পিয়াচ্ছা ভিত্তোরিও ফুড অব রোমা রেস্টুরেন্টে ইতালি আওয়ামী লীগের একটি অংশের সংবাদ সম্মেলনে বক্তরা এ অভিযোগ করেন। চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তরা বলেন, আমরা দুর্নীতিগ্রস্ত এমন ইতালি আওয়ামী লীগ চাই না। আগের কমিটি দীর্ঘ ৯ বছর ছিল। এরপরও সম্মেলন দিতে আগ্রহ দেখাননি। অবশেষ তাদের ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। ঠিক সেই পথেই বর্তমান মাহতাব-আলমগীর হাটঁছেন যা আমরা চল্লিশ বছর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে এমনটা দেখতে চাই না।
লিখিত বক্তব্যে এনআরবি ব্যাংকের পরিচালক ইতালি আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নজরুল ইসলাম মাঝি বলেন, সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সম্মেলন নিয়ে তালবাহানা করায় সম্মেলনের একদিন পূর্বে কার্যকরি পরিষদের সর্বাধিক সংখ্য সদস্যদের উপস্থিতিতে সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুর রউফ ফকিরকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শোয়েব দেওয়ানকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়ে সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অব্যাহতি দিয়ে একটি ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। সেই সময়ও সাবেক নেতৃবৃন্দের স্বেচ্ছাচারিতা, অসাংগঠনিক ও অনৈতিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনে সোচ্ছার ছিলো।
সম্মেলনে উপস্থিত সকলের সর্মথনে মাহতাব হোসেনকে সভাপতি, আলমগীর হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক, সরদার লুৎফর রহমানকে সহ-সভাপতি ও এম এ রব মিন্টুকে সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। কিন্ত ইতালি আওয়ামী লীগের দুর্ভাগ্য, সঠিক নেতা নির্বাচিত করতে ব্যর্থ হয়েছিলো। কিছু ছদ্মবেশী নীতি বিবর্জিত অসাংগঠনিক দুর্নীতি পরায়ণদের নেতা সর্বোচ্চ পদে নির্বাচিত হয়েছে। তিনি বলেন, ইতালি আওয়ামীলীগের সুনাম অক্ষুণœ রাখার প্রয়াসে, দলকে দুর্নীতির হাত থেকে রক্ষা করতে এবং ইতালিতে একটি শক্তিশালী আওয়ামীলীগ গঠন করার লক্ষ্যে এবং দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করতে সবাই ঐক্যবদ্ধ।
এ ছাড়া সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অপরাজনীতির নমুনা আপনাদের মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কর্মীদের উদ্দেশ্যে জানাতে চাই, যাতে তারা এদের মাধ্যমে আর প্রতারিত না হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তরা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলেছেন,"অযোগ্য নেতৃত্ব, নীতিহীন নেতা ও কাপুরুষ রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কোন দিন একসঙ্গে হয়ে দেশের কাজে নামতে নেই। তাতে দেশ সেবার চেয়ে দেশের ও জনগণের সর্বনাশই বেশি হয়।" দুঃখ জনক হলেও সত্যি, জাতির জনকের এই ঐতিহাসিক বাণী আজ ইতালি আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে সত্য বলে প্রতিয়মান হয়েছে। তাই অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে ইতালি আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কতিপয় নেতৃবৃন্দের সীমাহীন দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। তারা অভিযোগ করেন, সম্মেলনের ৪৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও প্রায় আড়াই বছরেও তারা কমিটি গঠন করতে ব্যর্থ হয়েছে। ইতালি আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের জন্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ২৭ হাজার ইউরো (৩৫ লক্ষ টাকা প্রায়) ফান্ড সংগ্রহ করেন, উল্লিখিত ফান্ড কোথায় এবং কীভাবে ব্যয় হয়েছে ইতালি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তার সঠিক তথ্য জানতে চায়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইতালি আওয়ামী লীগের-সহ সভাপতি আব্দুর রউফ ফকির, আফতার বেপারী, মাইনুদ্দিন লিটন হাজারী, আলী আযম, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এম এ রব মিন্টু, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান সিদ্দিকী, করিব হোসেন, আফছার বেপারী, আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফা, সাংগঠনিক সম্পাদক জি আর মানিক, ইলিয়াস মাদবার, এআর আহাম্মেদ তপু, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক বায়েজীদ আলী, বন ও পারিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রাজিব রহমান, ইতালি আওয়ামী লীগ সদস্য ইলয়াস মোল্লা, নাসির উদ্দিন মানিক, মো. ইব্রাহিম, নাসিম হোসাইন, সালাউদ্দিন, মোজাম্মেল হক, আবু সাইদ, রিপন তপদার, আব্দুর রহমান, আব্দুল মজিদ বাবুল,আওয়ামী লীগ নেতা ইমরুল কায়েছ, হাবিব মাতুব্বর, মামুন রহমান, দীন মোহাম্মদ, সাবেক যুব নেতা বাদশা, জাবেদ রহমান ও প্রমুখ।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
আপনার মতামত লিখুন :