বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে আরোপিত শুল্ক হার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে আনার সিদ্ধান্তকে দেশের জন্য ইতিবাচক উন্নয়ন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একইসঙ্গে এই উদ্যোগের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর উত্তরার আজমপুরে অনুষ্ঠিত এক স্মরণ সমাবেশে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয় জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শহীদদের স্মরণে।
ফখরুল বলেন, “কয়েকদিন আগেই দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের প্রতিযোগিতা কমে যাচ্ছিল। তবে এখন সরকার তা কমিয়ে ২০ শতাংশে নামাতে সক্ষম হয়েছে—এটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।”
তিনি বলেন, “আমি এই বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও সংশ্লিষ্ট পররাষ্ট্র নীতিনির্ধারকদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। তারা দেশের স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।”
বিএনপি মহাসচিব জানান, সরকার গঠনের পর কিছু সীমাবদ্ধতা ও অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও বর্তমান প্রশাসন চেষ্টা করছে। “আমি আশা করেছিলাম শহীদ পরিবারের পুনর্বাসনে তারা পূর্ণ তালিকা তৈরি করে কাজ এগিয়ে নেবে। পুরোপুরি সম্ভব না হলেও তারা চেষ্টা করছে,” বলেন তিনি।
সংস্কার কমিশনের সর্বশেষ বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল জানান, “গতকাল (৩১ জুলাই) কমিশনের বৈঠক শেষ হয়েছে। আশা করি দ্রুত পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আসবে।”
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। আমরা চাই এই নির্বাচন দ্রুত হোক এবং দেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার গঠিত হোক।”
তিনি অভিযোগ করেন, “বর্তমানে দেশে কোনো সংসদ সদস্য নেই, জনগণের সমস্যার কথা কেউ তুলছে না। তাই দ্রুত একটি কার্যকর পার্লামেন্ট দরকার।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আপাতত ভয়ংকর এক ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি পেয়েছি। তবে পূর্ণ মুক্তি তখনই সম্ভব, যখন তাদের রাজনৈতিকভাবে পরাজিত করা যাবে।”
দলীয় অবস্থান স্পষ্ট করে তিনি বলেন, “লুটপাট, চাঁদাবাজি, ব্যাংক দুর্নীতি—এসবের সঙ্গে যেসব গোষ্ঠী যুক্ত, তাদের সঙ্গে কোনো আপস হবে না।”
তারেক রহমানকে জনগণের আস্থার প্রতীক উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, “দেশবাসী এখন তার অপেক্ষায় আছে—তিনি কবে দেশে ফিরে নেতৃত্ব দেবেন।”
তিনি জানান, বিএনপি একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা করেছে, যেখানে থাকবে সবার সমান অধিকার, সুশাসন ও ন্যায়বিচার। এ লক্ষ্যেই `ফার্মার্স কার্ড`, `স্বাস্থ্য কার্ড`, `ফ্যামিলি কার্ড`সহ নানা পরিকল্পনা নিয়েছেন তারেক রহমান।
সমাবেশে বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা এবং শহীদদের পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন।
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এ.জে