ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণে আর কোনো আইনি বাধা না থাকলেও আন্দোলন থামাচ্ছেন না তার সমর্থকরা। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) হাইকোর্ট ইশরাকের শপথ না পড়ানো সংক্রান্ত রিট খারিজ করে দেয়। এর ফলে আইনগতভাবে ইশরাকের মেয়র হিসেবে শপথ নিতে আর কোনো বাধা রইল না। তবে সমর্থকদের ভাষায়, এটি তাদের “প্রাথমিক বিজয়” মাত্র।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, দুই উপদেষ্টার “অবৈধ হস্তক্ষেপ ও পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকা” ইশরাকের শপথ গ্রহণ প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করেছে। তাই তারা দাবি করছেন, এই দুই উপদেষ্টাকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।
বুধবার সকাল থেকেই কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ইশরাকের সমর্থকরা। সারারাত সেখানে কাটানোর পর বৃহস্পতিবার রায়ের খবর আসলেও তাদের একটি অংশ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
যুবদলের মতিঝিল থানা শাখার সাবেক নেতা আলাউদ্দিন বলেন:“ইশরাকের শপথের পাশাপাশি আমরা চাই – প্রশাসনের এই দুই মুখ্য উপদেষ্টার অপসারণ। তারা শুধু ব্যক্তি নন, তারা ক্ষমতার প্রতীক, যাদের কারণে গণতন্ত্র বারবার থমকে দাঁড়ায়।”
বুধবার সন্ধ্যায় কাকরাইলে আন্দোলনে এসে ইশরাক হোসেন নিজেই ঘোষণা দেন:“যতক্ষণ না আমি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব বুঝে পাচ্ছি, আন্দোলন চলবে। পাশাপাশি, অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ চাই। তারা গণরায়ের প্রতি অশ্রদ্ধা দেখিয়েছে।”
এরপর তিনি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে রাতভর অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন।
হাইকোর্টের রায়ের খবর আসার সঙ্গে সঙ্গেই কাকরাইল মসজিদ মোড় উৎসবে পরিণত হয়। নেতাকর্মীরা স্লোগান দেন:“
এই মুহূর্তে খবর এলো, ইশরাক ভাই মেয়র হলো”,
“এই মাত্র খবর এলো, জনগণের বিজয় হলো”।
দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি রাজনৈতিকভাবে স্পষ্ট বার্তা বহন করছে যে, আন্দোলন শুধু একজন নেতার শপথ নয়, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ও জবাবদিহির প্রশ্নেও প্রতীক হয়ে উঠেছে।
এ দাবির পেছনে বিএনপি একটি বৃহত্তর ন্যারেটিভ দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে— “নিরপেক্ষ আমলাতন্ত্র ছাড়া নির্বাচনী বিজয় অর্থহীন।”
এখন দেখার বিষয়, সরকারের পক্ষ থেকে এই দাবির কী জবাব আসে এবং ইশরাক কবে নাগাদ মেয়র হিসেবে শপথ নেন।
একুশে সংবাদ/আ.ট/এ.জে