স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও গবেষক অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (৮ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ। তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি ছিলেন এবং পরদিন তাঁর হার্টে রিং স্থাপনের কথা ছিল। মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তাঁর জামাতা সারোয়ার জাহান।
এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার উন্নয়ন ও বিকেন্দ্রীকরণে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। তিনি নিষ্ঠা ও প্রজ্ঞার সঙ্গে ২০২৪ সালে গঠিত স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং বাস্তবমুখী সংস্কার প্রস্তাব উপস্থাপন করেন, যা দেশের স্থানীয় শাসনব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত মূল্যবান অবদান।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “তোফায়েল আহমেদ ছিলেন একাধারে গবেষক, শিক্ষক ও নীতিনির্ধারণের প্রভাবশালী কণ্ঠস্বর। গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তোলার জন্য তাঁর আজীবন প্রচেষ্টা আমাদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।”
প্রধান উপদেষ্টা মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাঁর পরিবারের সদস্য ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ দীর্ঘ কর্মজীবনে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড)-এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সময় তিনি প্রথমে নির্বাচনি ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য এবং পরে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান।
অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ ১৯৫৫ সালের ৪ মে চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ফতেহাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও প্রশাসনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮১ সালে যুক্তরাজ্যের সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সামাজিক খাত পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় স্নাতকোত্তর এবং ১৯৯১ সালে উন্নয়ন অধ্যয়নে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
স্থানীয় সরকার ও প্রশাসনিক সংস্কার বিষয়ে তাঁর গবেষণা ও দিকনির্দেশনা বাংলাদেশের বিকেন্দ্রীকৃত শাসনব্যবস্থার উন্নয়নে আজও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
একুশে সংবাদ/এ.জে