ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে বিজয়ী বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন এখনো শপথ নিতে পারেননি। এ নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার বিভাগের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাতের অভিযোগ ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে আজ স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এক ফেসবুক পোস্টে শপথ না পড়ানোর পেছনের ১০টি আইনি ও প্রশাসনিক জটিলতা তুলে ধরেছেন।
সোমবার (১৯ মে) বিকেল ৩টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, “উচ্চ আদালতে বিচারাধীন ও বিভিন্ন জটিলতা নিরসন না হওয়া পর্যন্ত শপথগ্রহণ সম্ভব নয়।”
আসিফ মাহমুদের তুলে ধরা ১০টি কারণ:
১. হাইকোর্টের রায় লঙ্ঘন করে ট্রাইব্যুনালের রায় — আর্জি সংশোধন অবৈধ বলে উচ্চ আদালতের রায় থাকা সত্ত্বেও নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল ভিন্নমত দিয়েছে।
২. একপাক্ষিক রায় — নির্বাচন কমিশন ট্রাইব্যুনালের শুনানিতে অংশ নেয়নি এবং পরে আপিলও করেনি।
৩. আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত ছাড়াই গেজেট — দুটি লিগ্যাল নোটিশ উপেক্ষা করে রাত ১০টায় গেজেট প্রকাশ।
৪. স্থানীয় সরকার বিভাগ পক্ষভুক্ত নয় — মামলার রায়ে তাদের প্রতি কোনো নির্দেশনাও নেই।
৫. বিচারাধীন রিট — শপথ না দেওয়ায় ইসি স্থানীয় সরকার বিভাগকে বিবাদী করে রিট করেছে, যা এখনো বিচারাধীন।
৬. ভিন্নমুখী ট্রাইব্যুনাল সিদ্ধান্ত — বরিশাল সিটি মামলায় একই ধরনের রায় খারিজ হওয়ায় অবস্থান দ্ব্যর্থবোধক।
৭. মেয়াদ সংক্রান্ত অস্পষ্টতা — ইশরাকের মেয়রের মেয়াদ ঠিক কতদিন থাকবে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
৮. আইনি জটিলতার শর্ত — ইসি চিঠিতে ‘কোনো আইনি জটিলতা না থাকলে’ বলা হলেও বর্তমানে একাধিক জটিলতা বিরাজ করছে।
৯. আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত এখনো আসেনি — সেই মতামতের অপেক্ষা চলছে।
১০. রাজনৈতিক স্বীকৃতির প্রশ্ন — “আওয়ামী আমলে” হওয়া নির্বাচনগুলো বৈধ কি না, সে প্রশ্নও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে।
আসিফ মাহমুদ বলেন, “বিএনপি নেতৃত্বাধীন মহানগর দল নগর ভবন বন্ধ করে গায়ের জোরে শপথ আদায়ের চেষ্টা করছে। এতে জনদুর্ভোগ ও করপোরেশনের দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “জটিলতা নিরসন হলে শপথ নিয়ে কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু ইশরাক হোসেনের ব্যক্তিগত আক্রমণাত্মক আচরণের কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।”
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন ২০২০ সালের ঢাকার দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। পরাজয়ের পর তিনি ফলাফল চ্যালেঞ্জ করেন এবং দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে সম্প্রতি ট্রাইব্যুনাল তাঁর পক্ষে রায় দেয়। এরপর থেকেই তিনি শপথগ্রহণের দাবি জানিয়ে আসছেন।
একুশে সংবাদ/ আ.ট/এ.জে