দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান ও আফগানিস্তান চলমান সংঘাতের মধ্যে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ শনিবার থেকে কাতারের দোহায় শুরু হচ্ছে দুই দেশের সরকারি পর্যায়ের শান্তি সংলাপ; এই সংলাপ চলাকালীন যুদ্ধবিরতি বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছে উভয় পক্ষ।
রয়টার্স শুক্রবার জানিয়েছিল, পাকিস্তানের প্রতিনিধি দল ইতোমধ্যে দোহায় পৌঁছেছে, আর আজ শনিবার সেখানে যোগ দেবে আফগান প্রতিনিধিরা। অন্যদিকে জিও নিউজ পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সেনাবাহিনীর সূত্রে জানিয়েছে, ইসলামাবাদের প্রতিনিধি দল আজই দোহা রওনা হচ্ছে।
২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ইসলামাবাদ–কাবুল সম্পর্ক ক্রমেই অবনতি ঘটছে। এর মূল কারণ পাকিস্তানে সক্রিয় তালেবানপন্থি গোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি), যাকে নিষিদ্ধ করার পরও সংগঠনটি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। টিটিপির প্রধান ঘাঁটি পাকিস্তানের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়া, যা আফগান সীমান্তবর্তী অঞ্চল।
ইসলামাবাদের অভিযোগ— কাবুল সরকার টিটিপিকে আশ্রয় ও সহায়তা দিচ্ছে, যদিও তালেবান প্রশাসন তা বরাবরই অস্বীকার করেছে।
গত ৯ অক্টোবর রাতে কাবুলে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী, এতে টিটিপি নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদসহ সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নিহত হন। এর দুই দিন পর, ১১ অক্টোবর, সীমান্তবর্তী পাকিস্তানি সেনা পোস্টে হামলা চালায় আফগান বাহিনী। পাল্টা জবাবে পাকিস্তানও হামলা শুরু করে।
পাকিস্তানের সেনা সদর দপ্তর আইএসপিআর জানায়, চার দিনের সংঘাতে আফগান বাহিনীর অন্তত ২০০ সদস্য এবং পাকিস্তানের ২৩ সেনা নিহত হন। এরপর ১৫ অক্টোবর থেকে ৪৮ ঘণ্টার জন্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়।
তবে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরদিনই, শুক্রবার বিকেলে, পাকিস্তানি বিমানবাহিনী আফগানিস্তানের কান্দাহার ও পাকতিকা প্রদেশে বিমান হামলা চালায়, যাতে ৫০ জনের বেশি নিহত ও দেড় শতাধিক আহত হন। রাতেই কাবুল ও ইসলামাবাদ নতুন করে যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয়।
একুশে সংবাদ/এ.জে