বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের ইচ্ছেমতো সন্তান নিতে পারছেন না বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ)। তাদের মতে, এর পেছনে প্রধান বাধা হিসেবে রয়েছে সন্তানের বড় করার খরচ এবং উপযুক্ত জীবনসঙ্গীর অভাব।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সন্তান জন্মদানের হার বর্তমানে ইতিহাসের অন্যতম নিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে মন্তব্য করেছেন ইউএনএফপিএ নির্বাহী পরিচালক নাতালিয়া কানেম।
ইউএনএফপিএর সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে উদাহরণ হিসেবে উঠে এসেছে ভারতের মুম্বাইয়ের বাসিন্দা নম্রতা নানগিয়ার গল্প। স্বামী এবং পাঁচ বছর বয়সী কন্যা সন্তান নিয়ে তার ছোট পরিবার। দ্বিতীয় সন্তান নেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও অর্থনৈতিক বাস্তবতা তাদের সিদ্ধান্তকে থামিয়ে দিয়েছে।
নম্রতা নিজে একটি ওষুধ কোম্পানিতে এবং তার স্বামী একটি টায়ার কারখানায় কাজ করেন। তবে তাদের মতে, একটি সন্তান লালনপালনের খরচই ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ের ফি, পরিবহন খরচ এবং বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ—সব মিলিয়ে ব্যয় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
নম্রতা জানান, “আমাদের সময়ে আমরা শুধু স্কুলে যেতাম। অতিরিক্ত কোনো ক্লাস ছিল না। এখন সন্তানকে সাঁতার, আঁকা শেখানোর ক্লাসেও পাঠাতে হয়। তাদের নানা বিষয়ে দক্ষ করে তুলতে খরচ লাগছেই।”
ইউএনএফপিএ জানিয়েছে, এ ধরনের পরিস্থিতি এখন আর কেবল ব্যক্তিগত নয়—এটি এক বৈশ্বিক বাস্তবতায় পরিণত হয়েছে।
এই সংস্থাটি ১৪টি দেশের ১৪ হাজার মানুষের মধ্যে করা এক জরিপে দেখেছে, প্রতি পাঁচজনের একজন জানিয়েছেন যে তারা ইচ্ছেমতো সন্তান নিতে পারেননি বা সন্তান নেওয়ার আগ্রহই হারিয়ে ফেলেছেন।
জরিপে অংশ নেওয়া দেশগুলো হলো—থাইল্যান্ড, হাঙ্গেরি, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি, জার্মানি, সুইডেন, ব্রাজিল, মেক্সিকো, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, মরক্কো, নাইজেরিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। এই দেশগুলোতে বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ জনসংখ্যা বসবাস করে এবং এর মধ্যে রয়েছে নিম্ন, মধ্য ও উচ্চ আয়ের দেশ।
জরিপটি তরুণ প্রাপ্তবয়স্ক এবং প্রজনন বয়স অতিক্রম করেছেন—এমনদের মধ্যে চালানো হয়।
একুশে সংবাদ/ আ.ট/ এ.জে