সরকারি অচলাবস্থা বা শাটডাউনের প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো আকাশপথে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা ও ফ্লাইট বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। কেবল শনিবার (৮ নভেম্বর) একদিনেই দেশজুড়ে ১ হাজার ৪০০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং সাইট ফ্লাইটঅ্যাওয়ার জানিয়েছে, একই দিনে আরও প্রায় ৬ হাজার ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে। শুক্রবারও বিলম্বের সংখ্যা ছিল ৭ হাজারের বেশি। কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, আগামী কয়েক দিন পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, সরকারি অর্থায়ন সংকটের কারণে চলমান অচলাবস্থা ৩৯তম দিনে গড়িয়েছে। এতে ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)-এর কর্মীরা বেতন ছাড়া কাজ করছেন। নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা ও নিরাপত্তাকর্মীদের ক্লান্তি এবং অনুপস্থিতির ফলে ফ্লাইট সূচি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
এফএএ জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ধীরে ধীরে ফ্লাইট চলাচল ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো হবে। শুক্রবার থেকে শুরু করে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত ধাপে ধাপে এই হ্রাস কার্যকর করা হবে।
শনিবার সবচেয়ে বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে শার্লট/ডগলাস ইন্টারন্যাশনাল, নিউয়ার্ক লিবার্টি ইন্টারন্যাশনাল, এবং শিকাগো ও’হেয়ার ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে। নিউ জার্সির নিউয়ার্ক বিমানবন্দরে যাত্রীরা সবচেয়ে দীর্ঘ অপেক্ষায় পড়েছেন—গড়ে চার ঘণ্টার বেশি বিলম্বে পৌঁছাচ্ছে ফ্লাইটগুলো।
জন এফ কেনেডি (জেএফকে), আটলান্টা হার্টসফিল্ড-জ্যাকসন, ও লা গার্ডিয়া বিমানবন্দর থেকেও ফ্লাইট ছাড়তে বিলম্ব হয়েছে যথাক্রমে তিন ঘণ্টা, আড়াই ঘণ্টা ও এক ঘণ্টা পর্যন্ত।
পরিবহন দপ্তরের মন্ত্রী ডাফি এক্স-এ (সাবেক টুইটার) জানিয়েছেন, বাণিজ্যিক ফ্লাইটে চাপ কমাতে ব্যস্ত বিমানবন্দরগুলোয় ব্যক্তিগত জেট চলাচল সীমিত করা হয়েছে এবং এসব জেটকে ছোট বিমানবন্দর ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
শাটডাউনের কারণে কেবল এফএএ নয়, ট্রান্সপোর্টেশন সিকিউরিটি এজেন্সি (টিএসএ)-এর ৬৪ হাজার কর্মীরও বড় অংশ বেতন পাচ্ছেন না, ফলে বিমানবন্দর নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ব্যাহত হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ এই অচলাবস্থা এখনো অবসান হয়নি। কংগ্রেসে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের অর্থায়ন সংক্রান্ত অচলাবস্থা অব্যাহত রয়েছে।
এ অবস্থায় আমেরিকান এয়ারলাইনস এক বিবৃতিতে ওয়াশিংটনের নেতাদের উদ্দেশে বলেছে, “অচলাবস্থা যত দ্রুত সম্ভব শেষ করে দেশকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনুন।”
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

