আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার যুক্তি দেখিয়ে ১২টি দেশের নাগরিকদের ওপর সম্পূর্ণ এবং আরও সাত দেশের নাগরিকদের ওপর আংশিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, আগামী সোমবার (৯ জুন) থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
বুধবার (৫ জুন) হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, নতুন নির্বাহী আদেশে যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে, সেগুলো হলো:
আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন।
এছাড়া বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা—এই সাতটি দেশের নাগরিকদের ওপর আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এর আওতায় নির্দিষ্ট ভিসা ক্যাটাগরিতে বা বিশেষ নিরাপত্তা যাচাই ছাড়া ভ্রমণ নিষিদ্ধ থাকবে।
নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প বলেন,“আমার দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা এবং জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা। যেসব দেশ থেকে নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্যভাবে যাচাই-বাছাই করা সম্ভব নয়, সেসব দেশ থেকে আমরা মুক্ত ভ্রমণ অনুমতি দিতে পারি না। এটা খুবই সহজ সিদ্ধান্ত।”
ট্রাম্প আরও বলেন, “আমাদের দেশে রয়েছে কোটি কোটি অবৈধ অনুপ্রবেশকারী, যাদের এখানে থাকার কোনো অধিকার নেই। ইউরোপের মতো আমরা বিশৃঙ্খল অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে চাই না।”
হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প অভিযোগ করেন, সম্প্রতি কলোরাডোর বোল্ডারে একটি ইসরায়েলপন্থি সমাবেশে হামলার ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে, “যেসব বিদেশি নাগরিকদের যথাযথভাবে যাচাই করা হয়নি, তাদের প্রবেশ কতটা ভয়ংকর হতে পারে।”
এই নিষেধাজ্ঞার পর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, এই সিদ্ধান্ত নির্দিষ্ট দেশ ও জাতিগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে বৈষম্যমূলক মনোভাব প্রতিফলিত করছে। মানবিক ভিসাধারী ও রাজনৈতিক শরণার্থীদের নিরাপত্তা ও আশ্রয়ের বিষয়টিও এতে বিঘ্নিত হতে পারে।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই নতুন পদক্ষেপকে ২০২০ সালে জারি করা ‘মুসলিম ব্যান’-এর সম্প্রসারিত রূপ হিসেবে দেখছেন অনেক পর্যবেক্ষক।
সূত্র: আল জাজিরা
একুশে সংবাদ/চ.ট/এ.জে