কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা এখন কার্যত যুদ্ধের দিকেই এগোচ্ছে। এরই মধ্যে আজাদ কাশ্মীরের একাধিক স্থানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (NSC)।
বুধবার (৭ মে) প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে ‘যথাসময়ে, যথাযথ স্থানে এবং পছন্দমতো’ জবাব দেওয়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। পাকিস্তানের স্বার্থ রক্ষায় সামরিক বাহিনীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয় এনএসসি।
বৈঠক শেষে পাকিস্তানি গণমাধ্যম ‘ডন’ জানায়, জাতিসংঘ সনদের ৫১ নম্বর অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়—নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে এবং নিরীহ নাগরিকদের হত্যার বদলা নেওয়া সময়ের দাবি।
এদিকে, পাকিস্তানের আইএসপিআর মহাপরিচালক লে. জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী এক ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, ভারতের ‘কাপুরুষোচিত’ হামলায় আজাদ কাশ্মীরের কোটলি, মুজাফফরাবাদসহ কয়েকটি এলাকায় প্রাণহানি ঘটেছে। তিনি জানান, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী পাল্টা হামলা শুরু করেছে এবং পরিস্থিতি যুদ্ধে রূপ নিচ্ছে।
অন্যদিকে, ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা "অপারেশন সিন্দুর" এর আওতায় লস্কর-ই-তৈয়বা, জইশ-ই-মোহাম্মদ এবং হিজবুল মুজাহিদীনের ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে ৭০ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে। ভারতের বক্তব্য—এই অভিযানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর স্থাপনায় হামলা চালানো হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন ভারতীয় নিহত হয়। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক অবনতি শুরু হয়। ভারত সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করলে, পাকিস্তানও সিমলা চুক্তি স্থগিত করে ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। দুই দেশের বাণিজ্যও বন্ধ রয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধাবস্থা তৈরি হচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
একুশে সংবাদ/আ.ট/এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :