আফগানিস্তানকে পেছনে ফেলে হঠাৎই বিশ্বের শীর্ষ আফিম উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে মিয়ানমার। জাতিসংঘের বরাতে সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর রাষ্ট্রীয় মদদে আফিম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩৬ শতাংশ বাড়িয়ে এক হাজার ৮০ টনে উন্নীত করবে মিয়ানমার।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, তালেবান সরকার আফিম চাষে কড়াকড়ি আরোপের কারণে আফগানিস্তানে আফিমের উৎপাদন ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। আর এ কারণেই মিয়ানমার হয়ে উঠেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আফিম উৎপাদনকারী দেশ।
জাতিসংঘের ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম অফিস (ইউএনওডিসি)–এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমার এ বছর আনুমানিক ১ হাজার ৮০ মেট্রিক টন আফিম উৎপাদন করেছে।
ইউএনওডিসি আরও জানিয়েছে, গত বছরের এপ্রিলে পপি চাষে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তালেবান সরকার। এর পর থেকে আফিম উৎপাদন ৯৫ শতাংশ কমে গেছে। চলতি বছরে মাত্র ৩৩০ মেট্রিক টন আফিম উৎপাদন করেছে আফগানিস্তান।
ইউএনওডিসি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের শেষের দিকে মিয়ানমারের কৃষকেরা অধিকতর পপি চাষের সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের এ সিদ্ধান্ত মিয়ানমারকে এ বছর বিশ্বের শীর্ষ আফিম উৎপাদনকারী দেশে পরিণত করতে ভূমিকা রেখেছে বলে ধারণা কারা হচ্ছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ‘মিয়ানমারে বৈধ অর্থনৈতিক সুযোগ সীমিত হয়ে আসা, রাষ্ট্রীয় অবকাঠামোতে প্রবেশের সুযোগ না পাওয়া, মুদ্রাস্ফীতি এবং আর্থিক মন্দার কারণে আফিম ও অন্যান্য অবৈধ পণ্য উৎপাদন জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি আকর্ষণীয় বিকল্প তৈরি করতে পারে।’
ইউওডিসি বলেছে, গত বছর মিয়ানমার ৭৯০ মেট্রিক টন আফিম উৎপাদিত করেছিল।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলেছে, ২০২১ সালে সামরিক বাহিনী মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে। এরপর রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশটির অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তখন আর্থিক সংকট মোকাবিলায় অনেক কৃষক পপি চাষ করতে শুরু করে। বর্তমানে মিয়ানমারে পপি চাষের আওতাধীন এলাকা ৪৭ হাজার হেক্টর (এক লাখ ১৬ হাজার ১৪ একর), যা গত বছরের তুলনায় ১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
একুশে সংবাদ/আ.ট.প্র/জাহা