চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারে সবজি ও সামুদ্রিক মাছের দাম বেড়েছে। বিক্রেতারা জানান, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে গভীর সাগরে মাছ ধরতে না পারায় মাছের সরবরাহ কমেছে। ফলে বাজারে সামুদ্রিক মাছের দাম বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি, গরু-ছাগলের মাংস ও চালের দাম আগের মতোই চড়া রয়েছে। তবে ডিম, আলু, পেঁয়াজসহ বেশ কিছু মুদিপণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে।
নগরীর বকশিরহাট, সাবএরিয়া কাঁচাবাজার এবং বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকানে গিয়ে দেখা গেছে, এতদিন লইট্যা, পোয়া, চিংড়ি, রূপচাঁদা, কোরালসহ নানা মাছের দাম নাগালের মধ্যে থাকলেও জুলাইয়ের শেষভাগে এসে দাম বেড়ে গেছে। বাজারে লইট্যা ১৮০–২০০ টাকা, ফাইস্যা ১৫০–২০০ টাকা, পোয়া ২৫০–৩০০ টাকা, শাপলা পাতা মাছ ৩৫০–৪৫০ টাকা, কোরাল ৬০০–৯০০ টাকা, রূপচাঁদা ৩৫০–৭০০ টাকা, আইড় ৪০০–৬৫০ টাকা, চিংড়ি (বাগদা ও গলদা) ৬৫০–১২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ইলিশ মাছ এখনো সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে। এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২০০০–২৪০০ টাকায়, ৫০০–৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৫০০ টাকা, এক কেজির কিছু কম ওজনের ইলিশ ১৮০০–২০০০ টাকা, আর জাটকা বিক্রি হচ্ছে ৫০০–৫৫০ টাকায়। দুই থেকে আড়াই কেজির বড় ইলিশ প্রতি কেজি তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে সব বাজারে বড় ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না।
চাষের মাছের মধ্যে রুই ও কাতলা ৩৫০–৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০–৪৫০ টাকা, টেংরা ৬০০–৭০০ টাকা, পুঁটি ২০০–২৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩০০–৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০–৩০০ টাকা, নাইলোটিকা ২২০–২৮০ টাকা, শিং ৪০০–৪৫০ টাকা, কৈ ২০০–২২০ টাকা এবং পাঙ্গাস ২২০–২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির বাজারেও দেখা গেছে বাড়তি চাপ। প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ১০–২০ টাকা বেড়েছে। কাঁকরোল, বরবটি, ঝিঙা, পটল, ঢেঁড়শ বিক্রি হচ্ছে ৭০–৯০ টাকায়। করলা ও বেগুন ১০০–১১০ টাকা, শিম ৮০ টাকা, গাজর (দেশি) ৮০ টাকা, চায়না গাজর ১৩০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ১২০ টাকা, কচুর লতি ১০০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, শালগম ৭০ টাকা, মূলা ৬০ টাকা, কাঁচামরিচ ১২০–১৪০ টাকা, ধনেপাতা ১৮০–২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
শাকসবজির মধ্যে কচু শাক ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া শাক ৫০ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা ও লাল শাক ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুন্সীগঞ্জের আলু ২৫ টাকা, বগুড়ার লাল আলু ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আনন্দরকিল্লা সাবএরিয়া বাজারের বিক্রেতা সরোয়ার জানান, “আমরা রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়ত থেকে সবজি পাইকারি দরে কিনি। বৃষ্টির কারণে আড়তে সবজি কম আসছে, তাই দাম বেড়েছে।”
ব্রয়লার মুরগি ১৬০–১৭০ টাকা, সোনালি ২৮০–৩১০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৮০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৬০–২৭০ টাকা, হাঁস ৬০০–৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ৮৫০–৯৫০ টাকা এবং খাসি ও পাঁঠার মাংস ১২০০–১২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ডিমের দাম স্থির রয়েছে—ফার্মের মুরগির ডিম ডজনপ্রতি ১৩০ টাকা, দেশি ডিম ২৪০ টাকা, হাঁসের ডিম ২৬০ টাকা। চালের দামও এখনো চড়া। মিনিকেট চাল ৮০–৮২ টাকা, আতপ মিনিকেট ৮৫–৯০ টাকা, স্বর্ণা ৫৫–৫৭ টাকা, ব্রি-২৮/২৯ জাতের চাল ৬০–৬২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজ ৫০–৬০ টাকা, দেশি রসুন ১২০ টাকা, চায়না রসুন ১৮০–২০০ টাকা, চায়না আদা ১৮০–২০০ টাকা, ভারতীয় আদা ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মসুর ডাল (ছোট) ১৩০ টাকা, মোটা ১১০ টাকা, বড় মুগ ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ১৭০ টাকা, খেসারি ১০০ টাকা, বুট ১১০ টাকা, মাষকলাই ১৮০ টাকা, ডাবলি ৬০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা।
কাজু বাদাম ১৭০০ টাকা, পেস্তা বাদাম ২৭০০ টাকা, কাঠ বাদাম ১২২০ টাকা, কিশমিশ ৬০০–৭০০ টাকা, দারুচিনি ৫২০ টাকা, লবঙ্গ ১৪০০ টাকা, কালো গোলমরিচ ১৩০০ টাকা, সাদা গোলমরিচ ১৬০০ টাকা, জিরা ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
প্যাকেটজাত সাদা চিনি ১২৫ টাকা, খোলা সাদা চিনি ১২০ টাকা, লাল চিনি ১৪০–১৭০ টাকা, ২ কেজি প্যাকেট ময়দা ১৪০ টাকা, আটা ৯০ টাকা। বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯০–১৯৫ টাকা, খোলা সয়াবিন ১৮০ টাকা, সরিষার তেল ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
একুশে সংবাদ/চ.প্র/এ.জে