তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম জানিয়েছেন, ৫ আগস্ট অথবা তার আগেই "জুলাই ঘোষণাপত্র" প্রকাশ হতে পারে।শনিবার (২ আগস্ট) সকালে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় আয়োজিত পুনর্জাগরণ র্যালির সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “আমরা যে স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশকে কল্পনা করেছিলাম, সেই স্বপ্নের একটি লিখিত দলিল থাকা প্রয়োজন। সেই দলিলই হচ্ছে জুলাই ঘোষণাপত্র, যেখানে আমাদের আকাঙ্ক্ষিত রূপান্তরের দিকনির্দেশনা থাকবে।”
তিনি জানান, ঘোষণাপত্রে এমন সব বিষয়ের উল্লেখ থাকবে—যেগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পূর্বে থেকেই ন্যূনতম ঐকমত্য রয়েছে। তার ভাষায়, “সম্ভবত সব দলের স্বাক্ষর লাগবে না। মূল কথা হচ্ছে, জাতিগতভাবে যেসব বিষয় নিয়ে সহমত রয়েছে, সেগুলোই প্রাধান্য পাবে। আজই বা ৫ আগস্টের আগেই ঘোষণাপত্র প্রকাশ পেতে পারে।”
তথ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান কেন ঘটেছিল, কী ইতিহাস ও আকাঙ্ক্ষা আমাদের সেখানে পৌঁছে দিয়েছিল—এগুলোকে দলিলবদ্ধ করাই জুলাই ঘোষণাপত্রের মূল লক্ষ্য।”
তিনি জানান, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিভিন্ন সংস্থা—বিটিভি, বেতার, পিআইডি, পিআইবি সহ অনেক প্রতিষ্ঠান গত এক বছর ধরে এ নিয়ে নানা কাজ করেছে। শহীদ সাংবাদিকদের নিয়েও গবেষণামূলক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মাহফুজ আলম বলেন, “আমরা ১৬ জুলাই শহীদ মিনারে এসেছিলাম। সেখান থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত গিয়েছিলাম। কিন্তু রাজু ভাস্কর্যে পৌঁছাতে পারিনি। ১৭ জুলাই গায়েবানা জানাজায় হামলার পর আমরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারিনি। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।”
তিনি স্মরণ করেন, “ঢাকা শহরের আটটি প্রবেশপথে তুমুল প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিল। তখন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ রাজপথে নেমে এসেছিল, জীবন দিয়েছিল।”
তিনি বলেন, “এক বছর আগে যে অভ্যুত্থান ঘটেছিল, তাতে প্রায় ২ হাজার মানুষ শহীদ হয়েছেন, অনেকে আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। আমরা চাই, তাদের আত্মত্যাগের স্মৃতি অক্ষুণ্ন থাকুক। তাদের রক্তের ঋণ শোধ করার প্রেরণায় নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।”
মাহফুজ আলম আরও বলেন, “অনেকেই ছিলেন যারা এতদিন ফ্যাসিবাদী দমননীতির কারণে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। এখন তাদের মধ্যে অনেকে সেই অধিকার ফিরে পেয়েছেন, বৈষম্যের অবসান ঘটেছে। সবকিছু এক বছরে সম্ভব হয়নি, তবে আমরা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অগ্রসর হয়েছি।”
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এ.জে