চীনের উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইতালি। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ইতিমধ্যেই বেইজিং প্রশাসনকে বলেছন, চলতি বছরের সময়সীমার মধ্যেই বিআরই প্রকল্প থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেবে ইতালি। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
২০১৩ সালে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বিআরই নামে উচ্চাভিলাষী প্রকল্প হাতে নেন। এশিয়া ও ইউরোপকে সড়ক, রেল ও নৌপথে সংযুক্ত করার এ প্রকল্পের বাজেট ধরা হয় ১ ট্রিলিয়ন ডলার। তখন আমেরিকাসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো এই প্রকল্পের ব্যাপক সমালোচনা করেছিল। তবে একমাত্র পশ্চিমা দেশ হিসেবে ইতালি ২০১৯ সালে এই প্রকল্পের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল। চুক্তি ছিল পাঁচ বছরের। ২০২৪ সালে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই প্রকল্প থেকে বেরিয়া যাওয়া ঘোষণা দিল ইতালি।
গত ৪ ডিসেম্বর রোম সরকার চীনকে আনুষ্ঠানিকভাবে নোটিস দিয়ে বলেছে, তারা বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের সঙ্গে আর থাকছে না। রোমের এ চুক্তি প্রত্যাহারের পর চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের ক্ষতি করে এমন অপপ্রচার চীন সহ্য করবে না। তবে তিনি ইতালির নাম উল্লেখ করেননি।
গত বৃহস্পতিবার বেইজিং সফর করেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা। তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, চীনের এই প্রকল্পের অংশীদার হওয়া উচিত ইইউয়ের।
এরপর ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইন বলেন, ‘চীন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার। তবে এখানে স্পষ্ট ভারসাম্যহীনতা এবং পার্থক্য রয়েছে যা আমাদের অবশ্যই সমাধান করতে হবে।’
চীনের বিআরআইকে ‘ঋণ-ফাঁদ কূটনীতির’ উদাহরণ হিসেবে আমেরিকা প্রথম থেকেই সমালোচনা করে আসছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১৮টি সদস্য দেশের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ইতালি। দেশটির সঙ্গে চীনের বিআরই প্রকল্পের চুক্তির মেয়াদ আগামী বছরের মার্চে শেষ হওয়ার কথা এবং পুনর্নবীকরণ করার কথা ছিল।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেন, বিআরই প্রকল্পে যোগ দেওয়া ইতালির আগের সরকারের গুরুতর ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। তাই আমরা চুক্তি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে চীনের সঙ্গে ইতালির সুসম্পর্ক বজায় রাখা হবে।
চীনের এই প্রকল্পটিতে এই মুহূর্তে ১৫০টিরও বেশি দেশ চুক্তিবদ্ধ রয়েছে। তবে সম্প্রতি ফিলিপাইনসহ আরও বেশ কয়কটি দেশ বিআরই প্রকল্প থেকে বেরিয়ে গেছে। সেই তালিকায় যুক্ত হলো ইতালি।
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :