মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় মাদক বিক্রির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি, চাঁদার টাকা না দেওয়ায় প্রতিপক্ষরা এ হামলা চালিয়েছে। এতে দুটি গরু, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৩০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (৬ অক্টোবর) রাত থেকে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকাল পর্যন্ত উপজেলার শংকরদী ও পাট্টাবুকা গ্রামে। এ ঘটনায় দুবাই প্রবাসী নেয়ামত উল্লাহ বয়াতি (২৫) আহত হয়ে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যায় শংকরদী গ্রামের লাল মিয়া শেখের ছেলে রাজিব শেখ (৩৫) ও একই গ্রামের মৃত আবু তালেব বয়াতির ছেলে মনি বয়াতি (৩৫)-র মধ্যে গাঁজার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে রাতে রাজিব শেখ তার সহযোগীদের নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মনি বয়াতির মুদি দোকান ও বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এ সময় মনির চাচাতো ভাই মিলন বয়াতির বাড়িতেও হামলা চালানো হয়।
ওই রাতেই পাট্টাবুকা এলাকার সাবেক মেম্বার নাজির বয়াতি এবং মনির বড় ভাই, গরু ব্যবসায়ী নজরুল বয়াতি ওরফে নসুর (৪৫) বাড়িতে হামলা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরে মঙ্গলবার সকালে আবারও নসুর বাড়িতে হামলা চালিয়ে মোটরসাইকেল, ফ্রিজ ও বিভিন্ন মালামাল ভাঙচুর করা হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, হামলাকারীরা ঘরে থাকা নগদ ১০ লক্ষ টাকা, ১০ ভরি স্বর্ণালংকার ও দুটি গরু লুট করে নিয়ে যায়। পরে পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে লুট হওয়া দুটি গরু উদ্ধার করে। এ সময় প্রবাসী নেয়ামত উল্লাহ বয়াতিকে মারধর করা হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা জানান, রাজিবের কাছে টাকা পেতেন মনি। সেই টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এরপরই রাজিব ও তার সহযোগীরা প্রতিশোধ নিতে হামলা চালায়। এর আগে রাজিব ও তার ভাই বেলায়েত শেখ নসুর কাছেও চাঁদা দাবি করেছিল বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
ভুক্তভোগী সোনালী আক্তার বলেন, “রাজিবদের তাণ্ডবে আমাদের বাড়ির সব পুরুষ লোক পালিয়ে গেছে। আমরা নারীরাও নিরাপত্তাহীনতায় আছি। তারা আমাদের মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছে। আমরা ঘটনার সঠিক বিচার ও ক্ষতিপূরণ চাই।”
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খান বলেন, “লুট হওয়া দুটি গরু শংকরদী গ্রামের নদী পাড় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আর একটু দেরি হলে পাওয়া যেত না। বাকি লুট হওয়া জিনিস তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে। দুই পক্ষ থেকেই লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, উভয় পক্ষই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এবং গাঁজার টাকা ভাগাভাগি নিয়েই এ সংঘর্ষের সূত্রপাত।”
একুশে সংবাদ/এ.জে