শরৎ এলেই মানিকগঞ্জের প্রকৃতি যেন নতুন সাজে সেজে ওঠে। জেলার নদীঘেরা বিস্তীর্ণ মাঠ ও চরাঞ্চলগুলো শুভ্র কাশফুলে ঢাকা পড়ে। দূর থেকে মনে হয়, সাদা তুলোর মতো মেঘ নেমে এসেছে। বিশেষ করে পদ্মা, ধলেশ্বরী, কালীগঙ্গা ও ইছামতী নদীর দুই তীরজুড়ে কাশবনের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য যে কারও দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
সরজমিনে দেখা যায়, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া এলাকায় বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ফুটেছে কাশফুল। শত শত মানুষ মোবাইল ফোনের ক্যামেরা দিয়ে সেই সৌন্দর্যকে বন্দি করছেন। অনেকে আবার দামী ক্যামেরা হাতে নিজের ফটোসেশন করছেন। কেউ ভিডিও বানাতে ব্যস্ত, কেউ ঘুরে ঘুরে কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। এ যেন এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ।
পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা শরিফুল ইসলাম বলেন, "আমি ঢাকায় ব্যবসা করি। ব্যস্ত জীবনে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে বাড়িতে এসেছি। বাড়ির কাছেই এত সুন্দর প্রকৃতির রূপ। তাই পরিবার নিয়ে ঘুরতে চলে এসেছি।"
ঘুরতে আসা আরেক দর্শনার্থী শ্রাবণী চৌধুরী বলেন, "চারদিকে শুধু শুভ্রতা, নীরব বাতাস আর দুলতে থাকা ফুল—সত্যিই মনটা ভরে গেল। আমি অনেক ছবি তুলেছি, এই মুহূর্তগুলো আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রকৃতির এই সৌন্দর্য চোখে দেখলে একরকম অনুভূতি হয়, কিন্তু ভেতরে যে প্রশান্তি আসে, তা বর্ণনা করা যায় না।"
মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক রবিআহ নূর আহমেদ বলেন, "কাশফুল আসলে ছন গোত্রীয় এক ধরনের ঘাসজাত উদ্ভিদ। নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল, শুকনো রুক্ষ এলাকা বা গ্রামের উঁচু জায়গায় স্বাভাবিকভাবেই কাশের ঝাড় গড়ে ওঠে। তবে নদীর তীরেই এদের বেশি দেখা যায়। কারণ, নদীর পাড়ের পলিমাটিতে কাশের মূল সহজে বিস্তার লাভ করে।"
তিনি আরও বলেন, "শরৎ ঋতুতেই সাদা, ধবধবে কাশফুল ফোটে। বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলে কাশফুল জন্মে। এর ফুল পালকের মতো নরম হলেও পাতাগুলো চিরল ও ধারালো। প্রকৃতিকে সাজিয়ে তোলার পাশাপাশি নদীর তীরভাঙন রোধ ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়ও কাশফুলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।"
একুশে সংবাদ/মা.প্র/এ.জে