১৯৭১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর পাক বাহিনীর সনমান্দী গণহত্যায় নিহত শহিদদের স্মরণে এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় সোনারগাঁ জনকল্যাণ যুব সংস্থা ও রেঁনেসা ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আজ সনমান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তারা সনমান্দী গণহত্যার বিষয়ে বলেন, ১৯৭১ সালের আগস্টে চিলার বাগসহ আরও কয়েকটি গেরিলা যুদ্ধে পাক বাহিনী সোনারগাঁয়ে পরাজিত হয়। এর পর মুক্তিযোদ্ধাদের উপর পাল্টা আক্রমণের সুযোগ খুঁজতে থাকে।
এরই মধ্যে ৩১ আগস্ট ২নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার মেজর এটিএম হায়দারের অনুমোদনক্রমে সোনারগাঁও থানা কমান্ডার আব্দুল মালেকের পৃষ্ঠপোষকতায় সনমান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি উপ-প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। প্রায় ২০০ জন মুক্তিযোদ্ধা এই উপ-প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
এরপর ১৯৭১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর পাক বাহিনী সনমান্দী গ্রাম আক্রমণ করে। তখন বর্ষাকাল চলছিল। হানাদার পাক বাহিনী ভারী অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রায় ৪০টি বড় নৌকা নিয়ে গ্রামটিকে দক্ষিণ ও পূর্ব দিক থেকে ঘিরে ফেলে। তারা গ্রামবাসীর উপর নির্বিচার গুলি বর্ষণ ও মর্টার শেল নিক্ষেপ শুরু করে। প্রায় ৪০-৪৫টি বাড়িতে ঢুকে গান পাউডার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই হামলায় নিরীহ নারী ও শিশুসহ ১০ জন গ্রামবাসী শহিদ হন এবং বহু মানুষ গুরুতর আহত হন। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে বক্তব্য রাখেন সোনারগাঁও সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহফুজুল ইসলাম হায়দার, সনমান্দী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোফরান আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিল্লাল হোসেন, চেয়ারম্যানের কন্যা বিউটি আক্তার, বাংলাদেশ তথ্য মানবাধিকার ফাউন্ডেশন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মোহাম্মদ শামীম হোসেন, প্রতিবন্ধী শিশু কল্যাণ পরিষদের সভাপতি এম. এ. মহিন সরদার, পরিবেশ উন্নয়ন সোসাইটির মহাসচিব মিজানুর রহমান, রেনেসাঁ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের সদস্য মোহাম্মদ শাহজালাল, সোনারগাঁও জনকল্যাণ যুব সংস্থার সভাপতি ফয়সাল আহমেদ, সনমান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য মোঃ জাহাঙ্গীর ভূইয়া ও মোঃ সুরুজ মিয়া প্রমুখ।
একুশে সংবাদ/এ.জে