ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, টিকটকের মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে দেখা করতে এসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী। এই ঘটনায় তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ এবং অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আল আমিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলার একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীর সাথে টিকটক প্ল্যাটফর্মে পরিচয় হয় বোয়ালমারী উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা দাউদ বিশ্বাসের (২৩)। পরিচয়ের সূত্র ধরে দাউদ ওই কিশোরীকে তেলজুড়ি এলাকায় দেখা করতে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানায়।
মেয়েটি গত ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বোয়ালমারীতে আসে এবং দেখা করার পর এলাকার আশেপাশে ঘোরাঘুরি করে। সন্ধ্যার পরে দাউদ ও তার সহযোগীসহ মোট তিনজন ওই কিশোরীকে পরমেশ্বরদী গ্রামের ভদ্র মহাশয়ের একটি মেহগুনি বাগানে নিয়ে গিয়ে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে।
রাতে মেয়েটি বাড়িতে না ফেরায় তার পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একটি ফোনের সূত্র ধরে তারা দাউদ বিশ্বাসের মোবাইল নম্বর পান। ফোনে যোগাযোগ করা হলে প্রথম দিকে দাউদ এড়িয়ে গেলেও পরে জানায়, আধা ঘণ্টার মধ্যে মেয়েকে পাওয়া যাবে। এরপর মেয়ের বাড়ির লোকজন তেলজুড়ি আসার পথে ভ্যানে কিশোরীকে পান এবং তাকে নিয়ে সরাসরি বোয়ালমারী থানায় চলে যান।
এ ঘটনায় শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) মেয়ের দাদা বাদী হয়ে দাউদ বিশ্বাসকে নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও দুইজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯(৩)/১০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন।
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মামলা দায়েরের মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ প্রধান অভিযুক্ত দাউদ বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে। পরে দাউদের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অপর আসামি, দুর্গাপুর গ্রামের রাজ্জাক শেখের ছেলে মো. আতর আলী শেখকেও (২৩) গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত দু`জনকেই আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে প্রথমে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়। বর্তমানে চিকিৎসা শেষে সে বাড়িতে অবস্থান করছে।
ওসি মাহমুদুল হাসান আরও জানান, "বাদীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় মামলা নেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত দু`জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক অপর আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।"
একুশে সংবাদ/এ.জে