স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে গেলেও কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলা সদর থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত পাইকেরছড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মানুষ এখনো পাকা সড়কের মুখ দেখেনি। উপজেলার একেবারে সন্নিকটে থাকা এই গ্রামটি বছরের পর বছর যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতায় দিন কাটাচ্ছে।
তিন হাজার ভোটারের এই এলাকায় নেই কোনো প্রাথমিক বা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন কাদা-পানিতে ভরা রাস্তা পেরিয়ে উপজেলা সদরে যেতে হয়। যানবাহন চলাচল করতে না পারায় অসুস্থ রোগী, বিশেষ করে প্রসূতি মায়েদের হাসপাতালে নিতে গিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হয় স্থানীয়দের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গ্রামটিতে তিনটি কাঁচা রাস্তা রয়েছে, যেগুলোর অবস্থা করুণ। বর্ষায় রাস্তা কাদায় একাকার হয়ে যায়, আর শুষ্ক মৌসুমে সৃষ্টি হয় ধুলোর ঝড়। কোথাও কোথাও রাস্তায় বড় গর্তে পানি জমে থাকায় চলাচল একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে মানুষ বাইসাইকেল কিংবা পায়ে হেঁটে উপজেলা সদরে যাতায়াত করে।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন,“প্রতিটি নির্বাচনের আগে প্রার্থীরা এসে প্রতিশ্রুতি দেন—এইবার পাকা রাস্তা হবে। কিন্তু জয়ী হওয়ার পর আর তাঁদের দেখা মেলে না। ধুলো-কাদা মাড়িয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় ছেলে-মেয়েদের ইউনিফর্ম নোংরা হয়ে যায়, যার কারণে পরের দিন তারা যেতে পারে না।”
এ বিষয়ে পাইকেরছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সরকার বলেন, “বর্তমানে রাস্তা মেরামতের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের কোনো বরাদ্দ নেই। তবে আমরা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, যেন ভবিষ্যতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”
যোগাযোগ ব্যবস্থায় দেশের অগ্রগতি থাকলেও পাইকেরছড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড যেন সেই অগ্রগতির বাইরে পড়ে আছে। অবহেলিত এই জনপদের মানুষের একটাই দাবি—একটি পাকা সড়ক, যা তাদের জীবনমানের ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।
একুশে সংবাদ/কু.প্র/এ.জে