নাটোর জেলার বড়াইগ্রামে ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্য মদ্যপ অবস্থায় মাতাল হয়ে ৪ নারী ও ৩ জন পুরুষকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যায় উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের ভুইয়াপাড়া খ্রিস্টান পল্লীতে প্রায় এক ঘন্টা মদ্যপ ও মাতাল অবস্থায় যাকে কাছে পেয়েছে তাকেই বেধড়ক পিটিয়েছে বলে অভিযোগ করেন এলাকার অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ।
পরে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে আটক করে। অভিযুক্ত ওই ইউপি সদস্যের নাম আবুল কালাম খান ওরফে কালাম মাতাল (৪৫)। সে গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম খানের ভাই এবং গোপালপুর মধ্যপাড়ার মৃত আজাহার খাঁ এর ছেলে। এ ব্যাপারে হামলার শিকার আদিবাসী খ্রিস্টান নারী প্রিসিলা মালো বড়াইগ্রাম থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।
ওই খ্রিস্টান পল্লীর বাসিন্দা দিপালী রোজারিও জানান, রোববার সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে কালাম মাতাল মদ পান করে খ্রিস্টান পল্লীর রাস্তায় এক ভ্যানওয়ালাকে আটকিয়ে টাকা চায়। এতে না দিলে ওই ভ্যানওয়ালার হাতের আঙ্গুল কামড়ে ধরে ও বেধড়ক মারপিট করে। ওই ভ্যানওয়ালাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে আবু তাহের (৫০) ও তার ছেলে শাওন প্রামাণিককে (২৪) মারধর করে আহত করে সে।
মামলার বাদী প্রিসিলা মালো জানান, ওই একই সময় কালাম মাতাল হাতে বাটাম নিয়ে অনেককেই তাড়া করে। এক পর্যায়ে গাছের সাথে ও দেয়ালের সাথে ধাক্কা খেয়ে সে নিজেই রক্তাক্ত আহত হয়। তারপরও সে বাড়ির ভিতর ঢুকে আমাকে মারধর করে ও শ্লীলতাহানী করে। আমাকে উদ্ধার করতে এসে তার বাটামের আঘাতে রূপালী বৃগেল (৪০) এর ডান হাতের হাড় ভেঙ্গে গেছে। তার হামলায় আহত হয়েছেন ওই এলাকার রায়মন রোজারিও (৬০), আলেকজান্ডার মানিক (২৮) ও দিপালী রোজারিও (৪৫)। আহত সকলেই স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু বকর সিদ্দিক জানান, ইউপি সদস্য কালামকে সকলেই কালাম মাতাল নামেই ডাকে ও চিনে। তার এ ধরণের মাতলামী নতুন কিছু নয়। খ্রিস্টান পাড়াতে এ ধরণের ঘটনা আরও বেশ কয়েকবার ঘটিয়েছে। তার সংশোধন হওয়া জরুরী।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য কালামের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাকে (কালামকে) মেরে আহত করেছে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ শফিউল আযম খান জানান, উভয় পক্ষ থেকেই অভিযোগ পেয়েছি। রাতেই কালাম মেম্বারসহ ৩জনকে আটক করা হয়েছে। কালাম মেম্বারকে পুলিশ হেফাজতে রেখে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। সুস্থ হলে পরবর্তী আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
একুশে সংবাদ/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :