AB Bank
ঢাকা সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

কুবি উপাচার্যের দুর্নীতি বিষয়ে বক্তব্য সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক: টিআইবি


Ekushey Sangbad
কুবি প্রতিনিধি
০৭:১২ পিএম, ২ আগস্ট, ২০২৩
কুবি উপাচার্যের দুর্নীতি বিষয়ে বক্তব্য সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক: টিআইবি

সম্প্রতি দুর্নীতি বিষয়ে মার্কেটিং বিভাগের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন। বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমাকে একলোক এসে বলে স্যার, এ দেশে দুর্নীতির কারণে উন্নতি হচ্ছে না। আমি বলি উল্টোটা করে বলো না কেন? দেশে দুর্নীতির হচ্ছে দেখেই তো উন্নতি হচ্ছে। এটা নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন কথা বলতে পারে। কিন্তু এই যে ঘুষ খায়, এজন্য মানুষ পদ্মার পাড়ে যায় ইলিশ খেতে। এতে পদ্মার পাড়ের গরীব মানুষেরা ধনী হচ্ছে। অর্থনীতির সক্ল মেশিনারিজগুলো তখন কাজ করে৷ কারণ আমাদের হাতে এখন পয়সা আছে। পয়সা আসছে কোথায় থেকে, ঘুষ থেকে। এই বিষয় নিয়ে অর্থনীতিবিদগণ কখনো কোনো বিরূপ মন্তব্য করবে না। তবে যারা পলিটিক্যাল ইকোনমি নিয়ে কাজ করে তারা দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে থাকে। যারা নৈতিকতা নিয়ে কাজ করে তাদের কাছে খারাপ। তবে অর্থনীতির জায়গা থেকে যদি বল, দুর্নীতি কখনোই উন্নয়নের জন্য বাঁধা নয়।’

 

উপাচার্যের এমন বক্তব্য সংবিধান পরিপন্থি ও সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘তার এ বক্তব্য সংবিধান পরিপন্থি এবং সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক। একই সাথে সরকার প্রধানের জন্য অবমাননাকর, কারণ প্রধানমন্ত্রী ধারাবাহিকভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের ঘোষণা দিয়েছেন। অন্যদিকে সরকারের দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে ঘোষিত তথ্য অনুযায়ী দুর্নীতির ফলে বাংলাদেশের বার্ষিক জাতীয় আয়ের ২-৩ শতাংশ ক্ষতি হচ্ছে।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘উপাচার্য প্রত্যক্ষভাবে দুর্নীতি সহায়ক অবস্থান গ্রহন করেছেন, এবং দেশবাসীকে ও বিশেষকরে তরুণ প্রজন্মকে দুর্নীতির মতো জঘন্য, অবৈধ ও অসাংবিধানিক অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট হওয়ার জন্য উৎসাহ দিয়েছেন যা একজন উপাচার্যের জন্য আত্মঘাতীমূলক অনৈতিকতার উদাহরণ এবং বাস্তবে একটি অপরাধ। কারন দুর্নীতি করা যেমন আইনের লঙ্ঘন, তেমনি কাউকে দুর্নীতি করতে প্রশ্রয় দেয়া বা প্ররোচিত করা একই ধরনের অপরাধ।’

 

এদিকে চীনে সবাই দুর্নীতি করে তাই চীন এত উন্নত বলেও মন্তব্য করেন উপাচার্য। তিনি বলেন, ‘করাপশন একচুয়ালি ব্লকস ডেভেলপমেন্ট, দ্যাটস নট ট্রু। তাহলে চায়না কেন এত উন্নত? চায়নাতে সবাই দুর্নীতি করে।’

 

উপাচার্যের এ বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে শিক্ষক সমাজসহ বিভিন্ন জায়গায় সমালোচনার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শামীমুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষ তাঁর নৈতিকতার জন্য শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে পরিচিত। কেউ যদি জোর জবরদস্তি করে উন্নয়ন করে চাহিদা পূরণ করে তা কেবল নিজের ‘উন্নয়ন’ই হবে, জাতির উন্নয়ন হতে পারে না। জাতির উন্নয়নের জন্য নৈতিকভাবে উন্নয়ন করতে হবে, দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে নয়।‍‍`

 

একই বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, ‘দুর্নীতি বৈষম্য তৈরির অন্যতম উৎস। বৈষম্য টেকসই উন্নয়নের বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা ও পরিকল্পনার বিপরীতে অবস্থান করে। দুর্নীতির সাথে বৈষম্যের একটা সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধান ও উন্নয়নের দর্শন সততা, নৈতিক মূল্যবোধের উপর গুরুত্ব দেয়। উন্নয়ন মানে শুধু আর্থিক উন্নয়ন না। সার্বিক উন্নয়নে সৎ, ন্যায্য ও সাম্যের উপর ভিত্তি করে উন্নয়নকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বৈষম্য তৈরি করে শুধু আর্থিক উন্নয়ন হবে, যা আমাদের সার্বিক উন্নয়নের সাথে পরিপন্থি।’

 

অধ্যাপক বিদিশা আরও বলেন, ‘দুর্নীতি মূলত অন্যজনকে বঞ্চিত করে, ক্ষতিগ্রস্ত করে। দুর্নীতি করে মানুষ যে অর্থ উপার্জন করে তা সাময়িক, দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন সৎ থাকা ও সৎপথে প্রচেষ্টা করা। সফল মানুষদের দিকে দেখলে আমরা দেখতে পাই, সবাই সৎভাবে ও পরিশ্রমকে পুঁজি করে সফল হয়েছেন। কাজেই শিক্ষকদের উচিত সর্বদা নৈতিকতা, সততা ও ন্যায্যতার কথা বলা।’

 

একুশে সংবাদ/ই.ন.প্র/জাহা

Link copied!