২০২৫ সালের এই দিনের তাৎপর্য আরও গভীর, যখন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে।
বৈশ্বিক উষ্ণতা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, চরম মাত্রার বন্যা-ঘূর্ণিঝড় এবং লবণাক্ততার অভিঘাত মোকাবিলায় এখনই সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরি।
বিশ্বের সবচেয়ে জলবায়ু–ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর শীর্ষে থাকা বাংলাদেশের জন্য এ সংকট কোনো ভবিষ্যতের হুমকি নয়, এটি বর্তমানের কঠিন বাস্তবতা।
ওয়ার্ল্ড ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্স অনুযায়ী, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষ ১০-এ অবস্থান করছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে ২০৫০ সাল নাগাদ দেশের ১৭ শতাংশ ভূমি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এটি দুই কোটি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করতে পারে। এ ছাড়া অনিয়মিত বৃষ্টি, নদীভাঙন, খরা ও ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড়ের মতো দুর্যোগ ইতিমধ্যে কৃষি, অর্থনীতি ও জনস্বাস্থ্যে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশে দরিদ্রকে যেভাবে দরিদ্রতম করছে
জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (ন্যাপ): রূপকল্প ও চ্যালেঞ্জ
জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ তার জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (ন্যাপ) চূড়ান্ত করেছে, যাতে ১৪টি জলবায়ু ঝুঁকি চিহ্নিত করে ২০৫০ সাল পর্যন্ত ১১০টি কর্মকৌশল প্রস্তাব করা হয়েছে।
এই পরিকল্পনায় জলবায়ু–সহনশীল কৃষি ও মৎস্য খাত গড়ে তোলা, উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র ও বাঁধ নির্মাণ, নগরাঞ্চলে জলাবদ্ধতা রোধে টেকসই নিকাশি ব্যবস্থা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়িয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ শক্তি উৎপাদন নিশ্চিত করার মতো লক্ষ্যগুলো স্থান পেয়েছে।
এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়োজন ২৩০ বিলিয়ন ডলার, যার বেশির ভাগই আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।
তবে অর্থের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, কারিগরি জ্ঞান এবং স্থানীয় সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।