বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন পুনর্বহালের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কোনো সিদ্ধান্ত নেবে কি না, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে বলেননি ইসি সচিব আখতার আহমেদ। তবে তিনি জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশনা ইসিতে আনুষ্ঠানিকভাবে পৌঁছালে কমিশন তখন বিষয়টি বিবেচনায় নেবে।
রোববার (১ জুন) হাইকোর্টের দেওয়া জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণার রায় বাতিল করে আপিল বিভাগের রায় ঘোষণার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারকের বেঞ্চ রোববার জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের হাইকোর্টের ২০১৩ সালের রায় বাতিল করে দেন। এর ফলে নজরে থাকা জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিক দল হিসেবে পুনরায় বৈধতা পাওয়ার পথে এগিয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন জামায়াতে ইসলামীর সাময়িক নিবন্ধন দেয়।
২০০৯ সালে ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান বিরোধী এবং যুদ্ধাপরাধীদের নেতৃত্বে থাকার অভিযোগে ২৫ জন নাগরিক রিট করেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত রুল জারি করে।
২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে।
জামায়াত আপিল করে এবং এক দশক পর, ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর আপিল খারিজ হয়।
এরপর সরকারের পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন গতি আসে।
২০২৩ সালের জুলাই থেকে চলা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ১ আগস্ট জামায়াতকে সরকার অঙ্গসংগঠনসহ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন প্রশাসনের অধীনে জামায়াত নিষিদ্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার উদ্যোগ নেয়া হয়।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, “আদালতের চূড়ান্ত রায় এবং নির্দেশনা কমিশনে আনুষ্ঠানিকভাবে আসার পর কমিশন তার ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রায় কার্যকর হলে এবং ইসি নতুন করে নিবন্ধন দিলে জামায়াতে ইসলামী ফের নির্বাচনী রাজনীতিতে সক্রিয় হতে পারে। তবে এ সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের ইতিহাস ঘিরে জামায়াতের বিরুদ্ধে যে জনমত রয়েছে তা বিবেচনায় রাখতে হবে কমিশনকে।
একুশে সংবাদ / আ.ট/এ.জে