দক্ষিণ এশিয়ার অচল সার্ক কাঠামোকে বিকল্প দিতে বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানকে নিয়ে নতুন আঞ্চলিক সহযোগিতা প্ল্যাটফর্ম গঠনের প্রস্তাব করেছে ইসলামাবাদ।
গত বুধবার ইসলামাবাদ কনক্লেভ ফোরামে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইশহাক দার বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়ন ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণে আটকে থাকা উচিত নয়। তাই বাংলাদেশ ও চীনের সঙ্গে মিলে কার্যকর আঞ্চলিক জোট তৈরির সুযোগ রয়েছে। প্রয়োজনে এশিয়ার বাইরের দেশগুলোকেও ভবিষ্যতে এই কাঠামোয় যুক্ত করা যেতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
চলতি বছরের জুনে ঢাকা–বেইজিং–ইসলামাবাদের কূটনীতিকদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, অর্থনীতি ও জীবনমান উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়। সেই বৈঠকই নতুন উদ্যোগের ভিত্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
২০১৬ সালে ভারত–পাকিস্তান উত্তেজনার পর থেকে সার্ক কার্যত স্থবির। দক্ষিণ এশিয়ার বিপুল জনসংখ্যা ও বাজার থাকা সত্ত্বেও সদস্য দেশগুলোর পারস্পরিক বাণিজ্য মাত্র ৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ। বিশেষজ্ঞদের মত, সার্কের দীর্ঘ অচলাবস্থা পাকিস্তানকে বিকল্প আঞ্চলিক কাঠামো নিয়ে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করেছে।
সাম্প্রতিক সময়ের সংঘাত ও উত্তেজনায় দিল্লি–ইসলামাবাদ সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ায় ঢাকা–দিল্লি সম্পর্কও টানাপোড়েনে। ফলে পাক–বাংলাদেশ যোগাযোগ আগের তুলনায় কিছুটা ইতিবাচক অবস্থানে আছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, প্রস্তাবিত জোট উচ্চাকাঙ্ক্ষী হলেও বাস্তবতা কঠিন। দক্ষিণ এশিয়ার জটিল রাজনীতি, ভারতের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া এবং নিরাপত্তা–সংকট এই উদ্যোগের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
তবে চীন–পাকিস্তান ঘনিষ্ঠতা ও বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্কে অস্বস্তি আঞ্চলিক রাজনীতিতে নতুন ভারসাম্যের ইঙ্গিত দিচ্ছে। সার্ক অচল হয়ে পড়ায় পাকিস্তানের এই নতুন প্রস্তাব দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে ভিন্ন সমীকরণ তৈরি করতে পারে—যদিও এ উদ্যোগ সফল হওয়ার সম্ভাবনা এখনো সীমিত।
(তথ্য: আল জাজিরা)
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

