AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ঘোষণা ছাড়াই বাড়ল তেলেসহ নিত্যপণ্যের দাম


Ekushey Sangbad
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
০২:৩৬ পিএম, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৪
ঘোষণা ছাড়াই বাড়ল তেলেসহ নিত্যপণ্যের দাম

পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বাজারে বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। লিটার প্রতি সয়াবিন তেলের দাম ৪ টাকা করে বাড়িয়েছে বাজারজাতকারী কোম্পানিগুলো। একইসঙ্গে প্রতি কেজি আটায় ৫ টাকা ও চিনির দাম বেড়েছে ১৫ টাকা পর্যন্ত। শুধু এসব পণ্যই নয় ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পরপরই বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এ তালিকায় চাল, ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংসও রয়েছে।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার খুচরা দোকানি ও একাধিক সুপার শপ ঘুরে দেখা যায়, প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৩ টাকায়, যা নির্বাচনের আগ বিক্রি হয়েছে ১৬৯ টাকায়। ৫ লিটারের বোতলের দাম ৮২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৪৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। দাম বাড়িয়ে ৫ লিটারের বোতল নির্বাচনের আগে বাজারে ছাড়লেও নতুন দামের এক লিটারের সয়াবিন তেল নির্বাচনের পরই বাজারে এসেছে।

তেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলেছে, গত বছরের নভেম্বরে ডলারের দাম বেড়ে যায়। প্রতি ডলারের মূল্য ১১০ টাকা থেকে বেড়ে ১২২-১২৪ টাকা হয়ে যায়। ওই সময় ভোজ্য তেল পরিশোধন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের কাছে এই দাম সমন্বয়ের আবেদন করে গত নভেম্বরের ৯ তারিখ।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ট্যারিফ কমিশন ও ব্যবসায়ীরা মিলে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করলেও নির্বাচন সামনে রেখে দাম বৃদ্ধির অনুমতি দেয়ার বিষয়টি আর এগোয়নি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন এলসি খোলার জন্য ডলার কিনতে হচ্ছে ১২৬-১২৭ টাকায়, যে কারণে তারা দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন।

সাধারণত বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অনুমতি দেওয়ার পরই কোম্পনিগুলো বাজারে দাম বাড়ানো বা কমানোর ঘোষণা দিয়ে থাকে। এর আগে গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা কমিয়ে ১৬৯ টাকা করা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তেল, চিনি ও আটার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ডলার ও আন্তর্জাতিক সরবরাহ পরিস্থিতির যে অবস্থা, তাতে দাম বাড়াতে না পারলে লোকসান করতে হবে। নির্বাচনের কারণে এ অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। অবস্থা এখন এমন হয়েছে, দাম না বাড়ালে বাজারে পণ্য সরবরাহ করা মুশকিল হয়ে পড়বে।

বাড্ডার একজন মুদি দোকানি বলেন, তেলের দাম আরও বাড়াবে কোম্পানিগুলো। আমরা নির্বাচনের আগে ১৬৮ টাকা লিটারে সয়াবিন বিক্রি করেছি, এখন সেটা ১৭৩ টাকা। তারপরও ঠিকমতো সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। কোম্পানির লোকজন সরবরাহ কম দিচ্ছে এবং বলছে দাম আরও বাড়বে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা নিরুপায় হয়েই দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন। এছাড়া নতুন করে যুক্ত হয়েছে বাড়তি ফ্রেইট চার্জ। লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচল সীমিত হয়ে পড়ায় পণ্য পরিবহনের সময় এবং খরচ বেড়ে গেছে, যার প্রভাবও বাজারের ওপর পড়ছে।

সয়াবিন তেলের পাশাপাশি দুই কেজির প্যাকেটের আটার মূল্যও বাড়িয়েছে বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। দুই কেজির প্যাকেটের আটার দাম ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। চিনির দামেও একই ধরনের অস্থিরতা। প্রতি কেজি প্যাকেটের চিনি বাজারে ১৪৮ টাকা মূল্য থাকলেও বিক্রেতারা সেটা খুলে বাজারে বিক্রি করছেন ১৫৫-১৬০ টাকায়। বাজারে কোনো প্যাকেটের চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। খোলা চিনি অনেক ক্ষেত্রে যে যা পারছে, ইচ্ছেমতো দামে বিক্রি করছে।

ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ১৫ জানুয়ারির বাজার বিশ্লেষণের তথ্য বলছে, এক মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজি আটার দাম ৪.৩৫ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি কেজি আটার প্যাকেট ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকার বাজারে কোনো প্যাকেটের চিনি নেই। সব জায়গাতেই বিক্রি হচ্ছে খোলা চিনি। দু-একটি কোম্পানি কিছু প্যাকেটের চিনি সরবরাহ করলেও তার মোড়কে যে দাম, তা দিয়ে দোকানিদের লাভ থাকে না। সে কারণে ১৪৮ টাকা মূল্যের চিনির প্যাকেট কেটে ১৫৫-১৬০ টাকায় বিক্রি করছেন দোকানিরা। খোলা চিনিও একই দামে বিক্রি হচ্ছে।

গত কয়েকদিনে বেড়েছে চালের দাম। নির্বাচনের সপ্তাহখানেক পর হঠাৎ করেই চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। অথচ মাত্রই আমন মৌসুমের ধান কাটা শেষ হয়েছে। যেখানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ১.৭০ কোটি টনের মতো চাল সরবরাহ চেইনে যুক্ত হওয়ার কথা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর ২০ লাখ লিটার ভোজ্যতেল ও ২০ লাখ লিটার চিনির চাহিদা রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে আগামী রমজানে ভোক্তাদের ওপর আরও চাপ তৈরি হবে; যে কারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাজারে নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

এই পরিস্থিতিতেই খুচরা বিক্রেতারা জানান, মোটা চাল সপ্তাহখানেক আগেও বিক্রি হয়েছে ৪৮-৫০ টাকায়, যেটা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৪ টাকায়। মাঝারি মানের চিকন চালের দাম ৫৫-৫৯ টাকা থেকে বেড়ে ৬০-৬২ টাকা এবং মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো চিকন চাল ৬২-৭৫ টাকা থেকে বেড়ে ৬৮-৮০ টাকা হয়েছে।

নির্বাচনের আগে থেকে প্রভাব পড়তে শুরু করলেও গরুর মাংসের দাম নির্বাচনের পরই মূলত ঢাকায় ৬৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০০-৭৫০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ টাকা থেকে বেড়ে ২০০-২১০ টাকা হয়েছে। ডিমের দামও এ সময়ে প্রতি ডজন ১২৫-১৩০ টাকা থেকে বেড়ে ১৩০-১৩৫ টাকায় উঠেছে।

এদিকে, রমজান আসতে বাকি আরও দুমাস। এর মধ্যেই অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার। বেড়ে গেছে চাল, ছোলা, ডাল, বেসন, মাছ, মাংস ও খেজুরসহ কয়েকটি পণ্যের দাম। এতে বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা। এখনই এ অবস্থা হলে, রোজার সময় সব নাগালের বাইরে চলে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

 

একুশে সংবাদ/আ.ট.প্র/জাহা

Link copied!