সিরাজগঞ্জ জেলায় এবছরের উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষায় পাঁচটি কলেজের কোনো শিক্ষার্থীই পাস করতে পারেনি। পাশাপাশি আলিম পরীক্ষায় আরও দুইটি মাদ্রাসার সব পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। ফলে এবছর জেলার সাতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শতভাগ ফেল রেকর্ড হয়েছে, যা গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। অভিযোগ রয়েছে, ফেলের তালিকায় আরও কিছু মাদ্রাসা রয়েছে।
তথ্যসূত্রে জানা গেছে, শতভাগ ফেল করা কলেজগুলো হলো: শাহজাদপুর উপজেলার খুকনি মাল্টিলেটার হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, শাহজাদপুর ড. মোজাহারুল ইসলাম মডেল কলেজ,
সিরাজগঞ্জ সদরের ছোনগাছা মহিলা কলেজ, তাড়াশ উপজেলার মধুনগর আদিবাসী আদর্শ কলেজ, এবং রাণীরহাট আদর্শ কলেজ।
আলিম পরীক্ষায় শতভাগ ফেল করা মাদ্রাসাগুলো হলো: উল্লাপাড়া উপজেলার পুকুরপাড় এস অ্যান্ড বি ফাজিল মাদ্রাসা,বন্যাকান্দি আলিম মাদ্রাসা।
সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ও বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রোজিনা আক্তার বলেন, “এই ফলাফল অত্যন্ত হতাশাজনক। ইতিমধ্যে এসব প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষদের ডেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান। শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষক সংকট, অনিয়মিত ক্লাস এবং শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণার অভাবকে প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে।”
পাঁচটি কলেজ ও দুইটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন ধরা হয়নি।
শিক্ষা বিশ্লেষক ও সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ আমিনুল ইসলাম মন্তব্য করেছেন, “এই ফল শুধু কিছু প্রতিষ্ঠানের নয়, পুরো জেলার শিক্ষাব্যবস্থার জন্য সতর্কবার্তা। কলেজ পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপ্রীতি, প্রশাসনিক নজরদারির অভাব এবং শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় অনীহাই এখন বড় সংকট।”
শিক্ষার্থীরা জানায়, “পড়াশোনার পরিবেশ নেই, অনেক বিষয়েই শিক্ষক পাওয়া যায় না। অনেকে প্রাইভেট পড়ার সুযোগ না পেয়ে বাধ্য হয়ে পরীক্ষা দিতে হয়।”
জানা গেছে, গত সাত বছরে সিরাজগঞ্জ জেলায় একসঙ্গে এতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শতভাগ ফেল করেনি। গত বছর শতভাগ ফেল করা কলেজের সংখ্যা ছিল দুটি। এবছর তা বেড়ে পাঁচে পৌঁছেছে, সঙ্গে যোগ হয়েছে দুইটি মাদ্রাসা।
শিক্ষাবিদরা মনে করেন, এই ফল শুধু সংখ্যার হিসাব নয়, এটি শিক্ষার গুণগত মানের অবনতির এক কঠোর বার্তা। দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে জেলার প্রান্তিক অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা মূলধারার শিক্ষা থেকে ধীরে ধীরে পিছিয়ে পড়বে।
একুশে সংবাদ/এ.জে