AB Bank
  • ঢাকা
  • শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৫, ২৫ আশ্বিন ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

এক বছরে ৩৫ খুন বেশি ভাগ রাজনৈতিক বলি



এক বছরে ৩৫ খুন বেশি ভাগ রাজনৈতিক বলি

চট্টগ্রামে গেল এক বছরে অন্তত ৩৫টি হত্যা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ কোন্দল, চাঁদাবাজি, দখলসহ বিভিন্ন কারণে এসব হত্যার ঘটনা ঘটে। তবে এর মধ্যে বেশির ভাগই ছিল রাজনৈতিক। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে যেমন খুন হয়েছে, তেমনই প্রতিপক্ষের হাতে আওয়ামী লীগ এবং নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মী ও ক্যাডারও খুন হয়েছে। 

চট্টগ্রাম মহানগরী ছাড়াও ইপজেলার রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, ভূজপুর, ফটিকছড়ি, সীতাকুণ্ড ও সাতকানিয়ায় এসব অপরাধ সংঘটিত হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৬টি খুন হয়েছে রাউজানে। এদিকে প্রায় প্রতিটি হত্যার ঘটনায় মামলা হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আসামি ধরা পড়ছে না।

গত ৭সেপ্টম্বর মঙ্গলবার হাটহাজারীর ব্যস্ত সড়কে প্রকাশ্যে গাড়ি থামিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয় বিএনপি কর্মী আবদুল হাকিমকে। রাউজানের এই বাসিন্দাকে হত্যার পেছনেও রাজনৈতিক কারণ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান (বর্তমানে পদ স্থগিত) গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেছেন, তার এই অনুসারীকে পেশাদার খুনিরা হত্যা করেছে।

 পুলিশ বলছে, রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের কর্মী বা অনুসারীদের নিয়ন্ত্রণ করলে এ ধরনের ঘটনা ঘটত না। দলীয় সংঘাত এড়ানোর জন্য দলগুলোকে আরও সতর্ক হতে হবে। প্রশাসনের একার পক্ষে এসব ঘটনা বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে জেলা ও উপজেলা  পুলিশ সব সময় সক্রিয় রয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাউজানে প্রথম খুনের ঘটনা ঘটে ২০২৪ সালের  ২৮ আগস্ট। ওইদিন বিকালে পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরী মার্কেট এলাকায় পিটিয়ে হত্যা করা হয় রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নের শ্রমিক লীগ নেতা আবদুল মান্নানকে। ১ সেপ্টেম্বর সাবেক সংসদ-সদস্য ফজলে করিম চৌধুরীর বাগানবাড়ি থেকে মো. ইউসুফ মিয়া নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ১১ নভেম্বর নিখোঁজের ৩ দিনের মাথায় রক্তাক্ত অবস্থায় হাফেজ মাওলানা আবু তাহের নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২০২৫ সালের ২৪ জানুয়ারি উপজেলার নোয়াপাড়ায় গ্রামের বাড়িতে জুমার নামাজ পড়তে মসজিদে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন নগরীর খাতুনগঞ্জের আড়তদার মো. জাহাঙ্গীর আলম। ১৯ ফেব্রুয়ারি মুহাম্মদ হাসান নামে এক যুবলীগ কর্মীকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা। ১৫ মার্চ ইফতার মাহফিল নিয়ে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের মারধর ও ছুরিকাঘাতে খুন হন কমর উদ্দিন জিতু নামে এক যুবদল কর্মী। ২১ মার্চ পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হোয়ারাপাড়া এলাকার মোবারক খালের পূর্ব পাশে খোলা জমি থেকে মো. রুবেল নামে এক তরুণের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। ১৯ এপ্রিল রাতে খুন হন যুবদল কর্মী মানিক আবদুল্লাহ। ১৫ জন মুখোশধারী সন্ত্রাসী এসে ভাত খাওয়া অবস্থায় তার মুখে বন্দুকের নল ঢুকিয়ে হত্যা করে। ২২ এপ্রিল রাউজান উপজেলা সদরের কাছে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে গাজিপাড়া গ্রামে খুন হন ইব্রাহিম নামের এক যুবদল কর্মী। রাউজানে বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৯টি মামলা হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আসামি গ্রেফতার হয়নি বলে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো জানিয়েছে। দুটি খুনের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়নি পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে।

গত এক বছরে উত্তর জেলার ফটিকছড়ি ও ভূজপুরে ১০টি হত্যা হয়েছে। এর মধ্যে গত ১৮ মার্চ শান্তিরহাটে আধিপত্য বিস্তার ও মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের ঘটনায় রমজান আলী নামে এক যুবদলকর্মী প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে খুন হন। ২৭ ফেব্রুয়ারি নিউ দাঁতমারা চা বাগানের ভেতরে থেকে নিখোঁজের দুইদিন পর অটোচালাক বেলাল উদ্দিনের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। ১ ফেব্রুয়ারি দাঁতমারা ইউনিয়নের বড় বেতুয়ায় মো. শহীদ নামে এক বিএনপিকর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ৯ জানুয়ারি বাগানবাজারে বালু উত্তোলনে বাধা দেওয়ার জেরে দুলায়েত হোসেন দুলালকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তিনিও বিএনপির সমর্থক।

এছাড়াও ভূজপুর থানা এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্তানের হাতে ৬ এপ্রিল জুলেখা খাতুন নামে এক বৃদ্ধা নিহত হন। ৩ এপ্রিল মাসুম নামে এক যুবদল কর্মী প্রতিপক্ষের হাতে খুন হন। একই দিন জঙ্গল হারুয়ালছড়ি গ্রামের সুরণ রায়ের ছেলে তর্ম রায় বন্ধুদের দায়ের কোপে নিহত হন।

সীতাকুণ্ডে এক মাসে চারটি রাজনৈতিক হত্যার ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ শনিবার ভোরে স্থানীয় সন্ত্রাসী গ্রুপ ইয়াসিন বাহিনীর সঙ্গে রোকন-গফুর বাহিনীর সংঘর্ষে খলিলুর রহমান কানু নামে একজন নিহত হন। ২ জানুয়ারি মীর আরমান হোসেন রানা নামের এক শ্রমিক দলের নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। মীর আরমান সলিমপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি। এর আগে আরও দুইজনকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।

নগরীতে তিনটি রাজনৈতিক হত্যা সংঘটিত হয়। গত বছরের ২৮ অক্টোবর নগরীর ডবলমুরিং থানা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জেরে খুন হন বাস্তুহারা ইউনিট কমিটি বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নূর আলম। ১০ অক্টোবর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকার বার্মা কলোনিতে মো. সবুজ ও শান্তিনগর কলোনির মো. শাহ আলমের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে বিএনপি কর্মী মো. ইমন নিহত হন। চলতি বছরের ৪ মার্চ সাতকানিয়ায় সালিশের জন্য ডেকে নিয়ে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ‘মব জাস্টিস’ তৈরি করে জামায়াতের দুই কর্মী নেজাম ও আবু ছালেককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এছাড়া সাতকানিয়ায় দেলোয়ার হোসেন নামে এক যুবলীগ কর্মীকে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। রাজনৈতিক অস্থিরতার দলীয় হাই কমান্ড না মানা। রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা না থাকার কারনে এই হত্যকান্ড গুলো হচ্ছে বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা।

 

 

একুশে সংবাদ/এ.জে

Link copied!