নাটোরের বড়াইগ্রামে মমতাজ বেগম (৭০) নামে এক বৃদ্ধাকে হত্যার রহস্য তিন দিনের মধ্যে উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। দাদী মমতাজ বেগমের মুখমণ্ডল ও মাথায় টর্চ লাইট দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করেন নাতনী ফাউজিয়া আক্তার (২০)। পরে দাদীর হাতে ও কানে থাকা তিন ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে কথিত স্বামী মিনারুল ইসলাম (২৫)কে সঙ্গে নিয়ে এলাকা ত্যাগ করে ফাউজিয়া। পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাদের লোকেশন ট্র্যাক করে বৃহস্পতিবার ভোরে নাটোর শহরের হরিশপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে তাদের দুইজনকে আটক করে।
হত্যাকান্ডের শিকার মমতাজ বেগম ছিলেন উপজেলার বনপাড়া পৌর শহরের সরদারপাড়া মহল্লার মৃত শফিউল্লাহ মিয়া ওরফে শফি ইঞ্জিনিয়ারের স্ত্রী। হত্যার অভিযোগে আটক ফাউজিয়া একই মহল্লার মৃত শফিউল্লাহ মিয়ার ছোট ভাই হেদাউল্লাহ মিয়ার ছেলে শাহিনুজ্জামানের মেয়ে। আটক ফাউজিয়ার কথিত স্বামী মিনারুল ইসলাম একই উপজেলার মাঝগাঁও গ্রামের অহিদুল ইসলামের ছেলে।
বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারোয়ার হোসেন জানান, বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই শামীম হোসেন ও এএসআই রাজিব আলী হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে নিরলস পরিশ্রম করেছেন। হত্যাকারী ফাউজিয়া টর্চ লাইট দিয়ে দাদী মমতাজের মুখমণ্ডল ও মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে তিনি হাতে থাকা স্বর্ণের বালা-চুড়ি, আঙুলের আংটি ও কানের দুল নিয়ে পালিয়ে যান।
হত্যাকান্ডের পর ফাউজিয়া তার কথিত স্বামী মিনারুলকে সঙ্গে নিয়ে নাটোর শহরের তার বোনের বাড়িতে অবস্থান করছিল। পরে সেই স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করে নতুন কাপড়-চোপড় কিনে লাগেজে ভরে ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার ভোরে হরিশপুর বাসস্ট্যান্ডে আসে। সেখান থেকে থানা পুলিশ তাদের আটক করে।
উল্লেখ্য, গত রবিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার বনপাড়া পৌর শহরের সরদারপাড়া নিজ বাড়িতে খুন হন বৃদ্ধা মমতাজ। ফাঁকা বাড়িতে তিনি একাই থাকতেন। দায়িত্বরত প্রহরী এশার নামাজ পড়তে মসজিদে যাওয়ার সুযোগে ফাউজিয়া টর্চ লাইট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে ও মুখমণ্ডল থেঁতলে হত্যা করেন এবং পরিহিত সব স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে সুফিয়া খাতুন বেবি বাদী হয়ে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের নামে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
থানার ওসি আরও জানান, আটক ফাউজিয়া ও তার স্বামী মিনারুলকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে নাটোর জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/এ.জে