ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার মাইজকান্দি–ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর দীর্ঘদিন ধরে চারটি স্থানে বসছে সাপ্তাহিক হাট। এতে সৃষ্ট তীব্র যানজটে ভোগান্তিতে পড়ছেন হাজারো যাত্রী ও পথচারী। হাটের দিনগুলোতে যান চলাচল প্রায় স্থবির হয়ে পড়ে, ব্যাহত হয় স্বাভাবিক কর্মজীবন।
জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের কাদিরদী বাজার, সাতৈর বাজার এবং শেখর ইউনিয়নের বড়গাঁ বাজারে সপ্তাহে দুই দিন—সোমবার ও বৃহস্পতিবার—হাট বসে। এছাড়া বড়গাঁ থেকে তিন কিলোমিটার দূরে সহস্রাইল বাজারে প্রতি মঙ্গলবার ও শুক্রবার সাপ্তাহিক হাট বসে।
এই চারটি বাজারই মাইজকান্দি–ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর বা পাশে গড়ে উঠেছে। ফলে হাটের দিনগুলোতে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়, যা ফরিদপুর, আলফাডাঙ্গা ও গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীগামী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে ফেলে।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বড়গাঁ বাজারে হাটের দিনে মহাসড়কের দুই পাশে ভ্যান, ট্রলি ও দোকানপাটে ঠাসা এলাকা। কাঁচাবাজারের দোকানদাররা সড়কের ওপরেই পসরা সাজিয়ে বসেছেন। এতে পথচারী চলাচল দুরূহ হয়ে পড়ে এবং যানবাহনগুলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকে।
একই চিত্র দেখা গেছে সহস্রাইল বাজারেও—সবজি, মসলা ও দেশি ফলের দোকানে ভরে যায় পুরো রাস্তা। ফলে সকাল থেকেই শুরু হয় যানজটের ভোগান্তি।
সহস্রাইলের স্কুলশিক্ষক মাওলানা জাকারিয়া হোসেন বলেন, “হাটের দিন সকাল থেকেই রাস্তায় জ্যাম লেগে থাকে, হাঁটাও কষ্টকর হয়ে পড়ে।”
শিক্ষিকা শাপলা খানম বলেন, “সোমবার ও বৃহস্পতিবার বড়গাঁ হাটের কারণে আমাকে স্কুলে যেতে আধা ঘণ্টা আগে বের হতে হয়, তারপরও জ্যামে পড়ি।”
বড়গাঁর বাসিন্দা অনিক মিয়া জানান, “হাটের দিনগুলোতে মানুষ নিদারুণ কষ্টে থাকে। প্রশাসনের উচিত হাটগুলো মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নির্ধারিত জায়গায় বসানো।”
বড়গাঁ বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান মঞ্জু বলেন, “বাজারে যানজট সমস্যা সমাধানে শিগগিরই বণিক সমিতির সভা ডাকা হবে।”
সহস্রাইল বাজার বণিক সমিতির সভাপতি চুন্নু বিশ্বাস বলেন, “আগে কাঁচাবাজার সরিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় বসানো হয়েছিল, কিন্তু পরে ব্যবসায়ীরা আবার রাস্তায় উঠে আসে।”
বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফরিদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ সাইফুল্লাহ সরদার ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সফিকুর রহমান ফোন ও ইমেইলে সাড়া দেননি।
বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, “বিষয়টি আমার জানা আছে। স্থানীয় চেয়ারম্যানদের গ্রাম পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে যানজট নিয়ন্ত্রণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলা হবে। সহস্রাইল বাজারে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে, তবে বিকল্প সরকারি জায়গার অভাবে বাজার সরানো কঠিন।”
একুশে সংবাদ/ এ.জে