মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ৭৮ নং হরগজ দক্ষিণপাড়া ফৌজিয়া মালেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দীর্ঘদিন ধরে ব্যক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম—এমন অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্র ও অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রতিদিন সকাল ৮টায় বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে প্রাইভেট কোচিং করান এই শিক্ষক। চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তিনি প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে ফি নিচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রফিকুল ইসলামের কাছে প্রাইভেট না পড়লে তাদের ওপর মানসিক চাপ দেওয়া হয়, এমনকি পরীক্ষায় নাম্বারও কম দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক বলেন, “যে বাচ্চারা রফিক মাস্টারের কাছে প্রাইভেট পড়ে না, তাদের নানা অজুহাতে হয়রানি করা হয়।” জানা গেছে, চতুর্থ শ্রেণির মাত্র দুইজন শিক্ষার্থী তার কাছে প্রাইভেট পড়ে না—তাদের পরিবার অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল।
এছাড়া রফিকুল ইসলাম স্থানীয় একটি গাইড কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত থেকে শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট ‘ফুলকলি গাইড’ কিনতে বাধ্য করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এক অভিভাবক বলেন, “আমি অন্য গাইড কিনে দিয়েছিলাম, কিন্তু রফিক মাস্টার জোর করে ফুলকলি গাইড কিনতে বলেছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, “সরকারি ভবন ব্যবহার করে তিনি প্রাইভেট ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা নিষেধ করলে তিনি বলেন, স্কুলে আমি চাকরি করি—স্কুল আমার নিয়মে চলবে।”
অভিযোগের বিষয়ে সহকারী শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, “প্রাইভেট পড়ানো কোনো অন্যায় নয়। শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্যই আমি আলাদা করে ক্লাস নিই।”
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রতুল চন্দ্র সরকার বলেন, “সরকারি বিদ্যালয়ে প্রাইভেট পড়ানো বা নির্দিষ্ট গাইড কেনার জন্য শিক্ষার্থীদের বাধ্য করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় সুশীল সমাজের দাবি, এ ধরনের অসাধু শিক্ষকদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে এবং শিক্ষার্থীদের মেধার সঠিক মূল্যায়ন ব্যাহত হবে।
একুশে সংবাদ/এ.জে