মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামের আলোচিত নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে নিহত শিশু আছিয়ার পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির পক্ষ থেকে নির্যাতিত ও নিহত শিশুটির পরিবারকে স্বাবলম্বী করে তুলতে প্রদান করা হয়েছে দুটি বাছুরসহ দুটি দুগ্ধদায়ী গাভী এবং একটি টিনশেড গোয়ালঘর।
কেন্দ্রীয় জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে তার বিশেষ প্রতিনিধি, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও কুষ্টিয়া-যশোর অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসাইন বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে গুড়িগুড়ি বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে শ্রীপুর উপজেলার সব্দালপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত জারিয়া গ্রামে নিহত আছিয়ার জীর্ণ কুঁড়েঘরে গিয়ে পরিবারটির হাতে এসব সহায়তা তুলে দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাগুরা জেলা জামায়াতের আমির এমবি বাকের, সাবেক আমির ও কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আব্দুল মতিন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ আরও অনেকে। বক্তারা বলেন, শিশুটির পিতা একজন মানসিক রোগী। পরিবারে উপার্জনক্ষম কেউ নেই। ফলে আর্থিক স্বাবলম্বিতার জন্য আপাতত দুটি গাভী, দুটি বাছুর ও একটি গোয়ালঘর দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও এমন সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
এর আগে গত মার্চ মাসে ঢাকা থেকে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান শোকাহত পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে ছুটে যান। তিনি তখন পরিবারটির দুঃখ-দুর্দশা প্রত্যক্ষ করে তাদের স্বাবলম্বী করে তুলতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আজ সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবে রূপ নিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৬ মার্চ মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ৮ বছরের শিশু আছিয়া তার বোনের শ্বশুর হিটু শেখের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। এ নির্মম ঘটনাটি দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়। প্রতিবাদ মিছিল-সমাবেশে ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি ওঠে। গত ১৭ মে আদালত ধর্ষক হিটু শেখের ফাঁসির রায় প্রদান করেন।
নিহত আছিয়ার মা আয়েশা খাতুন বলেন, "বিপদের সময় অনেকেই আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, কেউ কেউ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আমার পরিবারের জন্য যে সহযোগিতা করা হয়েছে, তা আমি কখনো ভুলতে পারব না। ভবিষ্যতেও আমি তাদের এভাবে পাশে পেতে চাই।"
একুশে সংবাদ/মা.প্র/এ.জে