গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় নাইম মিয়া নামের এক যুবক কর্তৃক ভূমিহীন পরিবারের এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে।এ ঘটনায় সম্প্রতি থানায় মামলা হলে আসামীর পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।এরইমধ্যে আসামী পক্ষের লোকজন বাদীকে রাস্তা থেকে ফিল্মী স্ট্যাইলে তুলে নিয়ে মারধরসহ কয়েকজনের নামে থানায় সাজানো চুরির মিথ্যা মামলা করে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এঘটনার প্রতিবাদে শনিবার দুপুরে স্থানীয় প্রতিবাদী জনতার ব্যানারে সাদুল্লাপুর পাবলিক লাইব্রেরী এন্ড ক্লাবের সামনে গাইবান্ধা-সাদুল্লাপুর সড়কে ধর্ষন মামলার বাদী ও তার পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা প্রত্যাহারসহ দ্রুত ধর্ষক নাইমকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।মানববন্ধনে নারী পুরুষ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন স্বত:স্ফুর্ত ভাবে অংশ নেয়।
ঘন্টাব্যাপি অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ভূমিহীন নেতা কামরুল ইসলাম ও খলিলুর রহমান, স্থানীয় ব্যবসায়ী আজাহার আলী, উপজেলা জাসাসের নেতা মাছুদ মিয়া, ভিকটিমের নানা, বাবা ও মা প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, উপজেলার জয়েনপুর গ্রামের শহীদ মিয়ার ছেলে নাইম মিয়া একই গ্রামের অসহায় পরিবারের এক কিশোরীকে জোরপুর্বক ধর্ষণ করে। ফলশ্রুতিতে ওই কিশোরী অন্তঃস্বত্বা হয়ে পরে। এমতবস্থায় ধর্ষক নাইম ও তার পরিবার লোকজন অবস্থার বেগতিক বুঝে মিথ্যা বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ধর্ষিতার গর্ভপাত ঘটায়। পরে নাইম তার পরিবারের লোকজনের প্ররোচনায় বিয়ে না করে নানাভাবে তালবাহানা করতে থাকে। এমতবস্থায় নিরূপায় হয়ে ধর্ষিতা কিশোরীর মা বাদি হয়ে এসংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট থানায় একটি মামলা রুজু করেন।
বাদী জেলেখা বেগম বলেন, এই মামলা তুলে নিতে ধর্ষকের বাবা শহীদ মিয়া ও তার লোকজন আমাকে এবং আমার ভাগনি জামাইকে পরিকল্পিতভাবে রাস্তা থেকে সন্ত্রাসী কায়দায় তার বাড়িতে নিয়ে যায়। এরপর তারা আমাকে মামলা তোলার জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ দেয়। কিন্তু আমি তাদের কথায় রাজী না হলে তারা আমাদেরকে মারপিট করতে থাকেন।
তিনি আরও বলেন,ঘটনাটি তাৎক্ষনিক ভাবে আমার মেয়ে পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আমাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। তারপরে ধর্ষন মামলাটি ধামাচাপা দিতে আসামী নাইমের মা বাদি হয়ে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা চুরি মামলা দায়ের করেন।
ধর্ষিতার বাবা বলেন, দীর্ঘদিনেও পুলিশের রহস্যজনক ভুমিকায় ধর্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বরং আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
বক্তারা অনতিবিলম্বে ধর্ষক নাইমকে গ্রেফতার ও মিথ্যা চুরির মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার জানান, আসামী নাইম পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে তাকে গ্রেপ্তারে জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। আর চুরির মামলাটি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই মুহুর্তে সত্য মিথ্যা কোনটাই বলা যাচ্ছে না।
একুশে সংবাদ/গা.প্র/এ.জে