জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের মাফিয়াতন্ত্র, চাঁদাবাজি, গুম ও খুনের রাজনীতি বন্ধ করতেই আমরা মাঠে নেমেছি। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে, গণহত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
আজ রোববার (১৩ জুলাই) বিকেলে ঝালকাঠি শহরের কাপুড়িয়াপট্টিতে এনসিপির পথসভায় নাহিদ ইসলাম এ কথা বলেন। তবে কর্মসূচিটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিবাদের মুখে বাধাগ্রস্ত হয়।
পিরোজপুরের কর্মসূচি শেষ করে রাজাপুরে মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা ঝালকাঠির উদ্দেশে রওনা হন। প্রথমে তাঁরা কায়েদ সাহেব হুজুর প্রতিষ্ঠিত নেছারাবাদ এনএস কামিল মাদরাসা পরিদর্শন করেন এবং তাঁর কবর জিয়ারত করেন। এরপর শহরের ফায়ার সার্ভিস মোড় হয়ে প্রধান সড়কে শোভাযাত্রার পরিকল্পনা থাকলেও ছাত্রদের বাধার মুখে ভিন্ন রুটে তা পরিচালনা করতে হয়।
প্রথমে শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পথসভা করার কথা থাকলেও অন্তত দুটি স্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা শোভাযাত্রার পথরোধ করেন। পরিস্থিতির কারণে শেষ পর্যন্ত কাপড়িয়া পট্টি এলাকার একটি ভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন এনসিপি নেতারা।
সমাবেশে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, চাঁদার জন্য ঢাকায় একজনকে পাথর দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। যারা দখল, চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও কমিশনের রাজনীতি করতে চায়, দেশের মানুষ যেভাবে শেখ হাসিনাকে বিদায় করেছে, সেভাবে তাদেরও বিদায় করবে।’
তিনি আরও বলেন, একটি সফল গণঅভ্যুত্থানের পরও আমরা যেন আবার পুরনো দখলদার, গুম-খুনের রাজনীতিতে ফিরে না যাই। ইদানিং রাজনীতিতে একটি নতুন ভয়ের সংস্কৃতি গড়ে তোলা হচ্ছে, যা জুলাই আন্দোলনের চেতনাবিরোধী। আমরা এই সংস্কৃতির পরিবর্তন চাই।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা আখতার হোসেন, সামান্তা শারমিন, ডাক্তার মাহমুদা মিতু, মিতু, মশিউর রহমানসহ অনেকে।
তাঁরা বলেন, নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়তে হলে শোষণমূলক সংস্কৃতি ও সুবিধাবাদী রাজনীতির সঙ্গে কোনো আপস চলবে না। জুলাই সনদের মধ্য দিয়েই জাতির মুক্তির পথ রচিত হবে।
সমাবেশ শেষে ঝালকাঠি ত্যাগ করার সময় ফের প্রতিরোধের মুখে পড়েন এনসিপি নেতারা। শিক্ষার্থীরা তাদের গাড়িবহর আটকে দিয়ে অভিযোগ করেন, ঝালকাঠির এনসিপি ইউনিটে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যারা অতীতে দখলদারিত্ব ও দমন-পীড়নের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, ঝালকাঠির এনসিপির প্রধান সমন্বয়ক আমাদের সঙ্গে কোনো সমন্বয় না করেই আওয়ামী লীগের লোকজনকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। কমিটি গঠনের সময় আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিপির ঝালকাঠি জেলা শাখার প্রধান সমন্বয়ক মাইনুল ইসলাম মান্না বলেন, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি কমিটি গঠনের আগে-পরে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তদের নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছি।
একুশে সংবাদ/ঝা.প্র/এ.জে