রাজশাহীর তানোরে গ্রামীণ জনপদের অধিবাসীদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মাঝে শিক্ষা বিস্তারে অনন্য অবদান রেখে চলেছে কামারগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়। গ্রামীণ পরিবেশেও শহরের মতো আধূনিক পাঠদান দেয়া হচ্ছে।অত্যন্ত মনোরম ও নিরিবিলি পরিবেশ, নেই কোনো হৈহুল্লোড়, নেই কোনো কোলাহল একদম নিরব-নিস্তব্ধ।
তানোর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দুরে কামারগাঁ বাজার সংলগ্ন অবস্থান প্রতিষ্ঠানটির। গ্রামীণ পরিবেশ তবে শহরের মতো আধূনিক মানসম্মত পাঠদানের কোনো কমতি নেই। শহরের নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদানের যেসব আধুনিক সুযোগ-সুবিধা বা উপকরণ থাকে সেই সুযোগ-সুবিধা বা উপকরণ হয়তো বা এখানে নাই। তবে পাঠদানের ক্ষেত্রে তাদের থেকে তারা কোনো অংশেই পিছিয়ে নেই। এখানে তার যেনো পুরোটাই রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে একদল দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক মন্ডলী। যারা বিষয় ভিত্তিক মানসম্মত আধুনিক পাঠদানের মাধ্যমে পাবলিক পরীক্ষায় ধারাবাহিক সাফল্য ধরে রেখেছেন। প্রধান শিক্ষক সুব্রত কুমার পালের আন্তরিক প্রচেষ্টা, পরিচালনা কমিটি, অভিভাবক ও শিক্ষকদের সহায়তায় স্কুলে সেই সম্ভবনা তৈরি হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সম্ভব হচ্ছে শতভাগ উপস্থিতিতে টেকশই পাঠদান মূল্যায়ন এবং শিক্ষার্থী ও অভিভাবক পর্যায়ে স্বপ্ন বিনির্মাণ। উন্নত ও বাস্তব সম্মত শিক্ষার জন্য চলছে, প্রশিক্ষণ ও বিশ্লেষণ।
জানা গেছে, বিগত ১৯৭৩ সালে উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) কামারগাঁ বাজার সংলগ্ন এক একর জমির ওপর কামারগাঁ উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপন ও ১৯৮৫ সালে এমপিওভুক্তকরণ হয়। স্কুলে ১৪ জন শিক্ষক ও ৬ জন কর্মচারী এবং প্রায় তিনশ’ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। গত শিক্ষাবর্ষে এসএসসি পরীক্ষায় ৫১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪৫ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। এর মধ্যে ৫ জন এ প্লাস পেয়েছেন পাশের হার শতকরা প্রায় ৮৫ শতাংশ। চলতি শিক্ষাবর্ষে ৪৬ জন এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। কামারগাঁ স্কুলের মাধ্যমে গ্রামীণ জনপদের ছেলেমেয়েদের ঘরের পাশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। শহর বা গ্রাম বলে কোনো কথা নয় প্রতিষ্ঠান প্রধানের সদিচ্ছা থাকলে যে কোনো স্থানে সুন্দর পরিবেশে সৃষ্টি ও মানসম্মত শিক্ষা প্রদান করে শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান রাখা যায় কামারগাঁ স্কুল তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। স্কুলে বিভিন্ন বিষয়ে নিয়মিত বিতর্ক প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন, খেলা-ধূলা ও বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয় এতে একদিকে শিক্ষার্থীরা যেমন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ অন্যদিকে সৃজনশীল ও মননশীল হিসেবে গড়ে উঠছে। স্কুলের অবকাঠামো, শিক্ষাপোকরণ, জনবল, শিক্ষার্থী ও পাবলিক পরীক্ষায় ভালো ফল ধরে রেখেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক সুব্রত কুমার পাল বলেন, অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তারা মানসম্মত শিক্ষা প্রদানে প্রাণপন চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, তাদের স্কুলে সীমানা প্রাচীর, কম্পিউটার ল্যাব, বিজ্ঞানাগার প্রয়োজন, তাহলে তারা শিক্ষা বিস্তারে আরও অবদান রাখতে পারবেন।
একুশে সংবাদ/রা.প্র/এ.জে