মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় দুটি মন্দিরে সংঘটিত চুরির ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে জড়িত ছয় পেশাদার চোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ভাঙারির দোকান ও অন্য আসামিদের বসতবাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে মন্দির থেকে চুরি হওয়া বিভিন্ন পূজার সামগ্রী। শনিবার বিকেলে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মৌলভীবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজমল হোসেন, বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাহবুবুর রহমান মোল্লা ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুর রহমান।
পুলিশ জানায়, গত ১২ জুন রাত থেকে ১৩ জুন ভোরের মধ্যে বড়লেখার পাখিয়ালা এলাকার শ্রী শ্রী উদ্ভব ঠাকুরের আখড়া মন্দির এবং ২৬ জুন রাত থেকে ২৭ জুন ভোরের মধ্যে দক্ষিণভাগ সার্বজনীন দেবস্থলী মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটে। দুটি ঘটনায় বড়লেখা থানায় পৃথক মামলা দায়ের করা হয়।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) এর দিকনির্দেশনায় বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জের তত্ত্বাবধানে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে চুরি রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু হয়।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে প্রথমে দক্ষিণভাগ বাজারের রেললাইন এলাকা থেকে রুহেল আহমদ (৩০) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পরবর্তীতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরও ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন আবু তায়েব আহমদ সাজু (২৮), নুর হোসেন (৪০), জাকির হোসেন (৩১), মো. আলাল মিয়া (৩৮) ও শাহ আলী (৪২)।
পুলিশ আরও জানায়, তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বড়লেখার মাধবগুল এলাকায় শাহ আলীর ভাঙারির দোকান ও অন্য আসামিদের বসতবাড়ি থেকে চোরাই মালামাল উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মালামালের মধ্যে রয়েছে ১১টি পিতলের ঘট, ২টি কাসার ঘণ্টা, ২টি পুষ্প থালি, ১টি পিতলের প্রদীপ, ৮টি কাসার থালা, ৫টি কাসার বাটি, ২ সেট চিপ কোষা এবং ১টি পিতলের কলসি। এছাড়া চুরির কাজে ব্যবহৃত ১টি কাটার, ২টি হেক্সো ব্লেড, ১টি হেমার, ৩টি ছেলাই রেঞ্জ, ৩টি হাতুড়ি, ২টি রডের টুকরা ও ১টি লাল রঙের জগও জব্দ করা হয়েছে। এদিকে মন্দির কর্তৃপক্ষ উদ্ধার হওয়া মালামাল শনাক্ত করেছে।
মৌলভীবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নোবেল চাকমা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা চুরির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছে। আসামিরা পেশাদার অপরাধী এবং তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। মন্দিরে চুরির ঘটনায় কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক উসকানির প্রমাণ মেলেনি। এটি নিছক চুরির উদ্দেশ্যে সংঘটিত অপরাধ বলে উল্লেখ করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নোবেল চাকমা।
একুশে সংবাদ/মৌ.প্র/এ.জে