রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাট পৌরসভার সুন্দরপুর গ্রামের বাসিন্দা ও শ্রমিক লীগ নেতা আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে এলাকায় একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে তিনি ক্যাবল নেটওয়ার্ক ব্যবসায় একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বর্তমানেও যুবদল নেতা মশিউর রহমান মশির আশ্রয়ে তিনি সেই দাপট বজায় রেখেছেন।
বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, আনোয়ার হোসেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদের সাবেক ড্রাইভার এবং অর্থায়নকারী ছিলেন। সে সময় তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস করত না। স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর কিছুদিন আত্মগোপনে থাকলেও, পরবর্তীতে কাঁকনহাট পৌর যুবদলের নেতা মশিউর রহমান মশির ছত্রছায়ায় পুনরায় সক্রিয় হন আনোয়ার।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আনোয়ার ফের ক্যাবল নেটওয়ার্ক ব্যবসায়ীদের হুমকি-ধামকি দিয়ে আগের মতো আধিপত্য বিস্তার করছেন। তিনি একসময় সাবেক সংসদ সদস্য ফারুক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সহচর ও অর্থদাতা হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর দীর্ঘদিন তিনি এলাকায় অনুপস্থিত থাকলেও বর্তমানে আবার সক্রিয় হয়েছেন।
বিভিন্ন সিনিয়র রাজনৈতিক নেতারা জানান, কেন্দ্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত রয়েছে—ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের কোনোভাবেই দলে ঠাঁই দেওয়া যাবে না। কিন্তু আনোয়ারকে অর্থের বিনিময়ে আশ্রয় দিয়ে যুবদল নেতা মশিউর দলের আদর্শের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন। এতে করে স্থানীয় অনেক ত্যাগী নেতা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
এ বিষয়ে আনোয়ার হোসেনের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে যুবদল নেতা মশিউর রহমান মশি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি কাউকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছি না। আমার নিজের ডিস ব্যবসা আছে। আমাকে ঘিরে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি জানান, “প্রায় ৪-৫ বছর আগে মশিউর রহমান একজনের কাছ থেকে ডিসের লাইন কিনেছিলেন। সেই লাইন দেখভাল করতেন আনোয়ার। তখন থেকেই তাদের মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে। বর্তমানে আনোয়ারের যাবতীয় কার্যক্রম মশিউর পরিচালনা করছেন।”
এদিকে, কাঁকনহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জের নম্বর বন্ধ পাওয়া গেলে গোদাগাড়ী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুহুল আমিন জানান, “যারা হুমকি-ধামকির শিকার হচ্ছেন, তারা লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
একুশে সংবাদ/রা.প্র/এ.জে